Logo
Logo
×

সারাদেশ

চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীকে মারধর, বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা

Icon

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম

চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীকে মারধর, বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মশিউল আযম চুন্নু চাঁদা না পেয়ে ইতালী প্রবাসী মাসুমকে মারধর করেন।

রাজবাড়ীতে চাঁদা না পেয়ে এক ইতালী প্রবাসীকে মারধর করে গুরুতর আহত করার অভিযোগে বিএনপি নেতাসহ ৮ জনের নামে মামলা হয়েছে। 

আহত প্রবাসীর স্ত্রী পলি আক্তার বাদী হয়ে সোমবার রাজবাড়ী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বালিয়াকান্দি আমলি আদালতে এ মামলা করেন। 

বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব খন্দকার মশিউল আযম চুন্নু, তার ছেলে খন্দকার শফিউল আলম শিপলু, খন্দকার শোভন আরেফিনসহ ৮ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। 

এদিকে মারধরে অভিযুক্তদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন আহত মাসুম শেখ ও স্ত্রী পলি আক্তারসহ এলাকাবাসী। 

প্রবাসী মাসুম শেখ যুগান্তরকে বলেন, প্রায় ১৮ বছর ধরে ইতালি থাকেন। বালিয়াকান্দিতে পরিবার থাকায় প্রতি বছর একবার দেশে ফিরেন। গত ১৩ আগস্ট তিনি দেশে ফিরে ১৫ আগস্ট শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বাবার কবর জিয়ারত করে বাড়ি ফিরছিলেন। 

বাড়ির কাছে পৌঁছামাত্র মশিউল আযম, তার ছেলে শফিউল আলম শিপলুসহ কয়েকজন পথরোধ করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কোপ দেন। হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করেন। 

মাসুমের চিৎকার শুনে স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন এসে আক্রমণকারীদের আকুতি জানিয়েও তাকে রক্ষা করতে পারেননি। খবর পেয়ে বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আহত মাসুম শেখকে থানায় নিয়ে যায়। 

মাসুম শেখ বলেন, রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বালিয়াকান্দি থানায় আটকে রাখা হয়। সন্ধ্যার পর পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসক ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ গ্রহণ করেনি। 

তিনি বলেন, খন্দকার মশিউল আযম ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগপর্যন্ত আমার কাছ থেকে কয়েক দফা ৫-১০ হাজার টাকা করে নেন। ৫ আগস্টের পর থেকে তার কথার বাইরে গাছের একটি পাতাও নড়ে না। তার কথায় থানা চলে, উপজেলা প্রশাসন ও বাজার চলে। তিনি এবং তার সন্তানরা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করে বহুতল বাড়ি, ইটভাটা, জমি করেছেন। ১৩ আগস্ট দেশে আসামাত্র ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি মশিউল আযম ও তার ছেলেসহ জড়িত সবার গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। 

মামলার বাদী পলি আক্তার বলেন, তিনি বালিয়াকান্দি উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করতেন। মশিউল আযম চুন্নুর ছেলে খন্দকার শফিউল আলম শিপলু প্রায়ই আমাকে উত্ত্যক্ত করত। বাধ্য হয়ে ২০১৯ সালে একটি মামলা করলে ওই মামলায় কয়েক মাস জেলও খাটে। বাধ্য হয়ে বালিয়াকান্দি ছেড়ে ফরিদপুর বদলি হয়ে চলে যাই।

অভিযোগ অস্বীকার করে খন্দকার মশিউল আযম চুন্নু বলেন, মাসুম নিষিদ্ধ সর্বহারা দলের একজন সন্ত্রাসী। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে ৮ লাখ টাকা নেন। ওই ক্ষোভে শুক্রবার বিক্ষুব্ধ লোকজন তাকে মারধর করেছেন। চাঁদা দাবির অভিযোগ সত্য নয়। মাসুমকে গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার বিকালে বালিয়াকান্দিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা।

মামলার আইনজীবী ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী যুগান্তরকে বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব খন্দকার মশিউল আযম চুন্নুকে ২০২২ সালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। ইতালি প্রবাসী মাসুমের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় স্ত্রী পলি আক্তার বাদী হয়ে খন্দকার মশিউল আযম চুন্নু ও তার দুই ছেলেসহ ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত বালিয়াকান্দি থানাকে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম