জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্পের জন্য তৈরি ১৮০ একর জমি
যুগান্তর প্রতিবেদন
০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:২১:০০ | অনলাইন সংস্করণ
শিল্প স্থাপনের উপযোগী হয়েছে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল)। কাল মঙ্গলবার ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নারায়নগঞ্জে আড়াই হাজারে এটি তৈরি করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে মোট ৫০০ ভূমি উন্নয়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে ১৮০ একর জমিতে এখনই শিল্প স্থাপনের জন্য তৈরি রয়েছে। ইতোমধ্যেই ৪০টি বিদেশী কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। শিগগিরই বাকি জমিও হস্তান্তর করা হবে।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁও এ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) এক সংবাদ মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সংস্থাটির কার্যালয়ে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সদস্যদের সঙ্গে এ মতবিনিয়ম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। এসময় বক্তব্য দেন ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামান এবং জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ব্যবস্থাপনরিচালক তারোকাওয়াচি। এসময় বেজার সদস্যসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়লেও বেজা তার উন্নয়ন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখছে। প্রধানমন্ত্রী গত ২০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে প্রথমবারের মতো ৪টি শিল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে ছিলো ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, জাপানের নিপ্পন স্টিল, বাংলাদেশ ম্যাকডোনাল্ড ও টি কে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আশা করি জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাপানিজ বিনিয়োগ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।
এর মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প নির্মাণ কাজ শুরু করেছে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান সিংগার, চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে জার্মান কোম্পানি রুডলফের সঙ্গে। উদ্বোধনের দিনেই আগামী ৬ ডিসেম্বর এ জোনে ২টি জাপানিজ বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।
এছাড়াও, আরও প্রায় ৩০টি জাপানী এবং অন্যান্য দেশের ১০টি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন। খুব শিগগিরই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পুরো অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে এখানে আনুমানিক ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া এখানে প্রাথমিকভাবে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পথ চলা শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর ২০১৪ সালে জাপান সফরের মাধ্যমে। ২০১৫ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের সময় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়। ২০১৬ সালে জাইকা বাংলাদেশে একটি জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ হাতে নেয় এবং একই বছর জাপান সরকার বিশ্ব বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো করপোরেশনকে ডেভলপার হিসাবে নিয়োগ করার জন্য সুপারিশ করে।
২০১৮ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষে জাইকা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পক্ষে মত প্রদান করে। পরবর্তীতে যৌথ উদ্যোগে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ২০১১ সালে বেজা ও সুমিতমো করপোরেশনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বেজা ২০১৯ সালে প্রস্তাাবিত এলাকায় জমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু করে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ এবং শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়ো হচ্ছে। এসব জায়গায় মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগ এসেছে ২২১৭৩ দশমিক ১৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৮৪ একর এবং প্রস্তাবিত কর্মস্থান ৮ লাখ ১৬ হাজার ৫৪১ জনের।
এদিকে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ হয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলার এবং কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্পের জন্য তৈরি ১৮০ একর জমি
শিল্প স্থাপনের উপযোগী হয়েছে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল)। কাল মঙ্গলবার ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নারায়নগঞ্জে আড়াই হাজারে এটি তৈরি করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে মোট ৫০০ ভূমি উন্নয়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে ১৮০ একর জমিতে এখনই শিল্প স্থাপনের জন্য তৈরি রয়েছে। ইতোমধ্যেই ৪০টি বিদেশী কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। শিগগিরই বাকি জমিও হস্তান্তর করা হবে।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁও এ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) এক সংবাদ মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সংস্থাটির কার্যালয়ে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সদস্যদের সঙ্গে এ মতবিনিয়ম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। এসময় বক্তব্য দেন ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামান এবং জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ব্যবস্থাপনরিচালক তারোকাওয়াচি। এসময় বেজার সদস্যসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়লেও বেজা তার উন্নয়ন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখছে। প্রধানমন্ত্রী গত ২০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে প্রথমবারের মতো ৪টি শিল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে ছিলো ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, জাপানের নিপ্পন স্টিল, বাংলাদেশ ম্যাকডোনাল্ড ও টি কে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আশা করি জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাপানিজ বিনিয়োগ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।
এর মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প নির্মাণ কাজ শুরু করেছে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান সিংগার, চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে জার্মান কোম্পানি রুডলফের সঙ্গে। উদ্বোধনের দিনেই আগামী ৬ ডিসেম্বর এ জোনে ২টি জাপানিজ বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।
এছাড়াও, আরও প্রায় ৩০টি জাপানী এবং অন্যান্য দেশের ১০টি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন। খুব শিগগিরই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পুরো অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে এখানে আনুমানিক ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া এখানে প্রাথমিকভাবে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পথ চলা শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর ২০১৪ সালে জাপান সফরের মাধ্যমে। ২০১৫ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের সময় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়। ২০১৬ সালে জাইকা বাংলাদেশে একটি জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ হাতে নেয় এবং একই বছর জাপান সরকার বিশ্ব বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো করপোরেশনকে ডেভলপার হিসাবে নিয়োগ করার জন্য সুপারিশ করে।
২০১৮ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষে জাইকা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পক্ষে মত প্রদান করে। পরবর্তীতে যৌথ উদ্যোগে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ২০১১ সালে বেজা ও সুমিতমো করপোরেশনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বেজা ২০১৯ সালে প্রস্তাাবিত এলাকায় জমি অধিগ্রহণ ও ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু করে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ এবং শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়ো হচ্ছে। এসব জায়গায় মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগ এসেছে ২২১৭৩ দশমিক ১৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৮৪ একর এবং প্রস্তাবিত কর্মস্থান ৮ লাখ ১৬ হাজার ৫৪১ জনের।
এদিকে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ হয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলার এবং কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের।