মুম্বাই এসে জাভেদ আখতারকে গাছতলায় ঘুমাতে হয়েছে
বিনোদন ডেস্ক
১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৩:২৬:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ
ভারতের প্রখ্যাত গীতিকার জাভেদ আখতারকে মুম্বাই এসে প্রথমে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে।গৃহহীনদের সঙ্গে তাকে গাছতলায় ঘুমাতে হয়েছে।খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
১৯৬৪ সালের ৪ অক্টোবর মুম্বাইয়ে পা রাখেন জাবেদ আখতার। হাতে তখন না ছিল কাজ, না টাকাপয়সা। অর্থের সন্ধানে, নিজের ক্ষুরধার কলমের জোরে স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে মুম্বাই এসে পৌঁছান তিনি।
ভাগ্যের দরজা খোলার আগে গৃহহীনদের সঙ্গেই শহরের আনাচে-কানাচে থাকতে হতো তাকে। ঘুমের সরঞ্জাম নিয়ে এদিক থেকে ওদিক ঘোরাঘুরি করতে হতো।
সারাবেলা কাজের সন্ধান। রাত হলে কখনও কোনো বারান্দা, কখনওবা কোনো করিডোরে। মাঝে মাঝে আবার গাছের তলায় ভিড়ের মধ্যে রাত কাটিয়েছেন তিনি। সকাল হলে ফের লোটাকম্বল গুটিয়ে কাজের সন্ধান।
পাঁচ বছর এমনভাবেই কাটে তার জীবন। ১৯৬৯ সালে এমন একটি কাজ পান, যার ফলে গাছের তলায় ঘুমনোর প্রয়োজন হয়নি আর। তার পরেই সেলিম খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে বলিউডে একের পর এক সুপারহিট ছবির সংলাপ লেখা শুরু করেন জাভেদ। পরিচিত হন সেলিম-জাভেদ নামে।
'৭০ থেকে '৮০-র দশকজুড়ে বলিউডে রাজত্ব চালান তারা। ‘সীতা অউর গীতা’, ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’, ‘ডন’, ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-র মতো জনপ্রিয় ছবির স্ক্রিপ্ট তৈরি করেন তারা।
কিন্তু ১৯৮২ সালে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আলাদা হয়ে যায় সেলিম এবং জাভেদের পথ। আলাদা আলাদাভাবে কাজ করা শুরু করেন তারা। আলাদা হলেও স্বতন্ত্রভাবে নিজেদের নাম উজ্জ্বল করতে ব্যর্থ হননি কেউ-ই।
গীতিকার হিসেবে তিন বছর পর পর জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন জাভেদ। ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত যথাক্রমে ‘সাজ’, ‘বর্ডার’ এবং ‘গডমাদার’-ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, পদ্মভূষণ এবং পদ্মশ্রীও পেয়েছেন তিনি।
১৯৮৪ সালে অভিনেত্রী শাবানা আজমির সঙ্গে বিয়ে হয় জাভেদের। তিন দশক হয়ে গেল তাদের দাম্পত্যের। কিন্তু বিয়ের শুরুটা ততটা মসৃণ ছিল না। তার কারণ— তার আগে অভিনেত্রী হানি ইরানির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জাভেদের। দুই সন্তানও ছিল জাভেদ-হানি দম্পতির। ফারহান আখতার এবং জয়া আখতার।
শাবানা ও জাভেদের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার সময় সমাজ থেকে নানা কটাক্ষ এসেছিল। অনেকেই কাদা ছোড়া শুরু করেন তাদের দুজনকে নিয়ে।
শাবানার বিয়ে নিয়ে কথা বলার সময় এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন— আমি সেই সময়ে নিজের যুক্তি দিতে পারতাম সবাইকে। কিন্তু তাতে আরও কথা বাড়ত।
একই সঙ্গে তিনি হানি ইরানির প্রশংসা করেন। তার মতে, জাভেদের আগের পক্ষের স্ত্রী যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতেন, তা হলে হয়তো তাদের দাম্পত্য সহজ হতো না।
আজমি জানান, তাদের বিয়ের পর পরই হানি তার দুই সন্তানকে শাবানা-জাভেদের সঙ্গে লন্ডন-ভ্রমণে পাঠিয়েছিলেন। সেই থেকে সৎমায়ের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। আজও সেই সম্পর্কের স্বাস্থ্য বজায় রয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মুম্বাই এসে জাভেদ আখতারকে গাছতলায় ঘুমাতে হয়েছে
ভারতের প্রখ্যাত গীতিকার জাভেদ আখতারকে মুম্বাই এসে প্রথমে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে।গৃহহীনদের সঙ্গে তাকে গাছতলায় ঘুমাতে হয়েছে।খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
১৯৬৪ সালের ৪ অক্টোবর মুম্বাইয়ে পা রাখেন জাবেদ আখতার। হাতে তখন না ছিল কাজ, না টাকাপয়সা। অর্থের সন্ধানে, নিজের ক্ষুরধার কলমের জোরে স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে মুম্বাই এসে পৌঁছান তিনি।
ভাগ্যের দরজা খোলার আগে গৃহহীনদের সঙ্গেই শহরের আনাচে-কানাচে থাকতে হতো তাকে। ঘুমের সরঞ্জাম নিয়ে এদিক থেকে ওদিক ঘোরাঘুরি করতে হতো।
সারাবেলা কাজের সন্ধান। রাত হলে কখনও কোনো বারান্দা, কখনওবা কোনো করিডোরে। মাঝে মাঝে আবার গাছের তলায় ভিড়ের মধ্যে রাত কাটিয়েছেন তিনি। সকাল হলে ফের লোটাকম্বল গুটিয়ে কাজের সন্ধান।
পাঁচ বছর এমনভাবেই কাটে তার জীবন। ১৯৬৯ সালে এমন একটি কাজ পান, যার ফলে গাছের তলায় ঘুমনোর প্রয়োজন হয়নি আর। তার পরেই সেলিম খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে বলিউডে একের পর এক সুপারহিট ছবির সংলাপ লেখা শুরু করেন জাভেদ। পরিচিত হন সেলিম-জাভেদ নামে।
'৭০ থেকে '৮০-র দশকজুড়ে বলিউডে রাজত্ব চালান তারা। ‘সীতা অউর গীতা’, ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’, ‘ডন’, ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-র মতো জনপ্রিয় ছবির স্ক্রিপ্ট তৈরি করেন তারা।
কিন্তু ১৯৮২ সালে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আলাদা হয়ে যায় সেলিম এবং জাভেদের পথ। আলাদা আলাদাভাবে কাজ করা শুরু করেন তারা। আলাদা হলেও স্বতন্ত্রভাবে নিজেদের নাম উজ্জ্বল করতে ব্যর্থ হননি কেউ-ই।
গীতিকার হিসেবে তিন বছর পর পর জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন জাভেদ। ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত যথাক্রমে ‘সাজ’, ‘বর্ডার’ এবং ‘গডমাদার’-ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, পদ্মভূষণ এবং পদ্মশ্রীও পেয়েছেন তিনি।
১৯৮৪ সালে অভিনেত্রী শাবানা আজমির সঙ্গে বিয়ে হয় জাভেদের। তিন দশক হয়ে গেল তাদের দাম্পত্যের। কিন্তু বিয়ের শুরুটা ততটা মসৃণ ছিল না। তার কারণ— তার আগে অভিনেত্রী হানি ইরানির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জাভেদের। দুই সন্তানও ছিল জাভেদ-হানি দম্পতির। ফারহান আখতার এবং জয়া আখতার।
শাবানা ও জাভেদের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার সময় সমাজ থেকে নানা কটাক্ষ এসেছিল। অনেকেই কাদা ছোড়া শুরু করেন তাদের দুজনকে নিয়ে।
শাবানার বিয়ে নিয়ে কথা বলার সময় এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন— আমি সেই সময়ে নিজের যুক্তি দিতে পারতাম সবাইকে। কিন্তু তাতে আরও কথা বাড়ত।
একই সঙ্গে তিনি হানি ইরানির প্রশংসা করেন। তার মতে, জাভেদের আগের পক্ষের স্ত্রী যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতেন, তা হলে হয়তো তাদের দাম্পত্য সহজ হতো না।
আজমি জানান, তাদের বিয়ের পর পরই হানি তার দুই সন্তানকে শাবানা-জাভেদের সঙ্গে লন্ডন-ভ্রমণে পাঠিয়েছিলেন। সেই থেকে সৎমায়ের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। আজও সেই সম্পর্কের স্বাস্থ্য বজায় রয়েছে।