শাকিব-মাহি কাণ্ডে উত্তাল ঢাকাই সিনেমা, যা বলেছেন তিন প্রথিতযশা
হাসান সাইদুল
২০ মার্চ ২০২৩, ২২:৪৫:৪৭ | অনলাইন সংস্করণ
সিনেমা নিয়ে আলোচনা নেই, কিন্তু এ মুহূর্তে ঢাকাই সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের সিনেমার বাইরের কর্মকাণ্ডই বেশি চর্চিত হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই অবশ্য নায়ক-নায়িকাদের বিভিন্ন ঘটন-অঘটনই সিনেপাড়ার মুল বিনোদন।
হালে আবারও এ বিনোদনের পালে বাতাস লেগেছে। তার তা দিয়েছেন নায়ক শাকিব খান ও নায়িকা মাহিয়া মাহি। সম্প্রতি শাকিব খানের বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পী সমিতিতে ধর্ষণ সহ একাধিক অভিযোগ করেন রহমত উল্লাহ নামে এক প্রযোজক।
তার দাবি, অস্ট্রেলিয়ায় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামে একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন শাকিব বিভিন্ন অনৈতিক কাণ্ড ঘটিয়েছেন। অভিযোগের পর একদিন শাকিব ও সেই প্রযোজক মীমাংসার জন্য বসেছিলেনও। কিন্তু মীমংসা হয়নি। পরদিন রাতেই শাকিব থানায় ছুটে যান সেই প্রযোজকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করে। তার দাবি, তিনি (রহম উল্লাহ) প্রযোজক নয়, প্রতারক ও বাটপার।
অন্যদিকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি অভিনয়ের চেয়ে রাজনীতিতেই বেশি সময় দেন এখন। স্বামী ক্ষমতাসীন সরকার দলের একজন থানা পর্যায়ের নেতা। স্বামীর গাড়ির শোরুম তার বিরোধী পক্ষ দখল করে নিচ্ছে, আর তাতে ‘ঘুষের বিনিময়ে সহযোগিতা করছেন গাজীপুর পুলিশের সর্বোচ্চ একজন কর্মকর্তা।
ফেসবুক লাইভে এসে এমন দাবি করেন তিনি। আর তাতেই তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা হয়। মাহি যখন ফেসবুকে লাইভ করেন, তখন তিনি ছিলেন সৌদি আরব। সেখান থেকে ফেরার পথে শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানন্দর থেকে গ্রেফতার হন তিনি।
গ্রেফতারের চার ঘন্টা পর মানবিক কারণে (আট মাসের অন্তঃস্বত্তা) ছাড়াও পান তিনি।
এদিকে ঢালিউডের এসব ঘটনা নিয়ে চিত্রাঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তারকাদের আইনের দ্বারস্থ হওয়া কিংবা গ্রেফতারের বিষয়টি নতুন কিছু নয়। তবু প্রযুক্তির সহজলভ্য এ সময়ে বিষয়গুলো সারা পৃথিবী ছড়িয়ে পরে। এতে করে সিনেমার মানুষের প্রতি সাধারন মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারনা তৈরি হয় বলে অনেক বোদ্ধারা জানিয়েছেন। বিভিন্ন ধরনের মন্তব্যের পাশাপাশি ঢাকাই সিনেমার সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
এ প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা সোহেল রানা বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি চলচ্চিত্র ডেথ। এখন যা হচ্ছে আলাপ আলোচনা। সে আলোচনার ফল আমরা দেখছি। এগুলো নিয়ে কিছুই বলার নেই। কেউ কাউকে মানছে না। অনেকটা শক্ত মনের হয়ে গেছে সবাই। এগুলো থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে না সহজে। অনেক পেছনে চলে গেছি আমরা। অভিভাবকহীনতায় ভুগছে ইন্ডাস্ট্রি।’
পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ বলেন, ‘শাকিব খান ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক ভালো ভালো কাজ করেছেন। অনেক অবদান আছে। মাহিও বেশ একজন নায়িকা। তবে এখন যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এটা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এটা তারা নিজেরা সমাধান করবেন। আমার কোনো পরামর্শ নেই।’
শিল্পী সমিতির সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বর্তমানে কানাডা অবস্থান করছেন। মোবাইল ফোনে যুগান্তরকে তিনি বলেন, ‘কিছু ঘটলে এবং এর সত্যতা মিললে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। যেহেতু আমি দেশের বাইরে। দেশে ফিরে কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যা তা দেখা যাবে। তবে যে দুই শিল্পীর কথা বলা হয়েছে, যে সমস্যার কথা বলা হয়েছে এগুলো ব্যক্তিগত। তাদের কি পরামশ দেব। তারাই তো নিজের বিষয়গুলো ভালো বুঝেন।’
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শাকিব-মাহি কাণ্ডে উত্তাল ঢাকাই সিনেমা, যা বলেছেন তিন প্রথিতযশা
সিনেমা নিয়ে আলোচনা নেই, কিন্তু এ মুহূর্তে ঢাকাই সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের সিনেমার বাইরের কর্মকাণ্ডই বেশি চর্চিত হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই অবশ্য নায়ক-নায়িকাদের বিভিন্ন ঘটন-অঘটনই সিনেপাড়ার মুল বিনোদন।
হালে আবারও এ বিনোদনের পালে বাতাস লেগেছে। তার তা দিয়েছেন নায়ক শাকিব খান ও নায়িকা মাহিয়া মাহি। সম্প্রতি শাকিব খানের বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পী সমিতিতে ধর্ষণ সহ একাধিক অভিযোগ করেন রহমত উল্লাহ নামে এক প্রযোজক।
তার দাবি, অস্ট্রেলিয়ায় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামে একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন শাকিব বিভিন্ন অনৈতিক কাণ্ড ঘটিয়েছেন। অভিযোগের পর একদিন শাকিব ও সেই প্রযোজক মীমাংসার জন্য বসেছিলেনও। কিন্তু মীমংসা হয়নি। পরদিন রাতেই শাকিব থানায় ছুটে যান সেই প্রযোজকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করে। তার দাবি, তিনি (রহম উল্লাহ) প্রযোজক নয়, প্রতারক ও বাটপার।
অন্যদিকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি অভিনয়ের চেয়ে রাজনীতিতেই বেশি সময় দেন এখন। স্বামী ক্ষমতাসীন সরকার দলের একজন থানা পর্যায়ের নেতা। স্বামীর গাড়ির শোরুম তার বিরোধী পক্ষ দখল করে নিচ্ছে, আর তাতে ‘ঘুষের বিনিময়ে সহযোগিতা করছেন গাজীপুর পুলিশের সর্বোচ্চ একজন কর্মকর্তা।
ফেসবুক লাইভে এসে এমন দাবি করেন তিনি। আর তাতেই তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা হয়। মাহি যখন ফেসবুকে লাইভ করেন, তখন তিনি ছিলেন সৌদি আরব। সেখান থেকে ফেরার পথে শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানন্দর থেকে গ্রেফতার হন তিনি।
গ্রেফতারের চার ঘন্টা পর মানবিক কারণে (আট মাসের অন্তঃস্বত্তা) ছাড়াও পান তিনি।
এদিকে ঢালিউডের এসব ঘটনা নিয়ে চিত্রাঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তারকাদের আইনের দ্বারস্থ হওয়া কিংবা গ্রেফতারের বিষয়টি নতুন কিছু নয়। তবু প্রযুক্তির সহজলভ্য এ সময়ে বিষয়গুলো সারা পৃথিবী ছড়িয়ে পরে। এতে করে সিনেমার মানুষের প্রতি সাধারন মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারনা তৈরি হয় বলে অনেক বোদ্ধারা জানিয়েছেন। বিভিন্ন ধরনের মন্তব্যের পাশাপাশি ঢাকাই সিনেমার সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
এ প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা সোহেল রানা বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি চলচ্চিত্র ডেথ। এখন যা হচ্ছে আলাপ আলোচনা। সে আলোচনার ফল আমরা দেখছি। এগুলো নিয়ে কিছুই বলার নেই। কেউ কাউকে মানছে না। অনেকটা শক্ত মনের হয়ে গেছে সবাই। এগুলো থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে না সহজে। অনেক পেছনে চলে গেছি আমরা। অভিভাবকহীনতায় ভুগছে ইন্ডাস্ট্রি।’
পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ বলেন, ‘শাকিব খান ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক ভালো ভালো কাজ করেছেন। অনেক অবদান আছে। মাহিও বেশ একজন নায়িকা। তবে এখন যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এটা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এটা তারা নিজেরা সমাধান করবেন। আমার কোনো পরামর্শ নেই।’
শিল্পী সমিতির সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বর্তমানে কানাডা অবস্থান করছেন। মোবাইল ফোনে যুগান্তরকে তিনি বলেন, ‘কিছু ঘটলে এবং এর সত্যতা মিললে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। যেহেতু আমি দেশের বাইরে। দেশে ফিরে কিভাবে সমস্যার সমাধান করা যা তা দেখা যাবে। তবে যে দুই শিল্পীর কথা বলা হয়েছে, যে সমস্যার কথা বলা হয়েছে এগুলো ব্যক্তিগত। তাদের কি পরামশ দেব। তারাই তো নিজের বিষয়গুলো ভালো বুঝেন।’