১২ দিনে ৫০ হাজার পর্যটক মালদ্বীপে
মোহাম্মদ মাহামুদুল, মালদ্বীপ থেকে
১৮ জানুয়ারি ২০২২, ২০:০৪:১২ | অনলাইন সংস্করণ
২০২২ সালের প্রথম দুই সপ্তাহে ৫০ হাজারের বেশি পর্যটক মালদ্বীপ ভ্রমণ করছেন। পৃথিবীর অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত দেশ ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। শান্ত ও মনোরম পরিবেশ, পুরাতন এই সমুদ্র সৈকত মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ। যেখানে পানির রং নীল আর বালির রং সাদা। তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা মালদ্বীপের সবগুলো দ্বীপের চারদিকে ঘিরে আছে সাগরের অফুরন্ত জলরাশি।
শ্রীলংকা থেকে প্রায় ৪৫০ মাইল পশ্চিম-দক্ষিণে ১২০০টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত হয় মালদ্বীপ। এর মধ্যে ২৫০টি দ্বীপ ব্যবহারযোগ্য। এতে রয়েছে ২৮টি অ্যাটোল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা মাত্র এক দশমিক পাঁচ মিটার। বিষুবরেখার কাছে অবস্থিত হওয়ায় মালদ্বীপ বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশটিতে মাত্র একটি ঋতু আছে। সারা বছর গড় তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৯৮ বর্গকিলোমিটারের শতভাগ মুসলিম দেশ মালদ্বীপের রাষ্ট্রীয় ভাষা ধিবেহী আর মালদ্বীপীয় রুপাইয়া হলো মুদ্রার নাম।
এশিয়ার সবচেয়ে ছোট এবং দুনিয়ার সবচেয়ে নিচু দেশ মালদ্বীপ। দেশটিতে প্রতি বছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করতে আসে। সূর্যাস্ত যাওয়ার পর ঢেউয়ের তালে তালে জ্বলজ্বলে করতে থাকে দেশটির বালুময় সমুদ্র সৈকত।
সমুদ্রের পানি থেকে বিচ্ছুরিত হয় অদ্ভুত আলো। সে এক অসাধারণ দৃশ্য যা দেখে চোখ বিস্ময়ে আটকে থাকে। এজন্য অনেকের কাছেই হানিমুনের জন্য সবচেয়ে পছন্দের দেশ মালদ্বীপ।
একমাত্র মালদ্বীপেই বিশালাকার সাবমেরিনে করে সমুদ্রের তলদেশে ঘুরে বেড়ানো যায়, পর্যটকদের প্রায় ১৮০ ফুট পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশে নিয়ে যায়। গভীর সমুদ্রের সৌন্দর্য সবাইকে বিমোহিত করে। যেখান থেকে পর্যটনরা সমুদ্রের বিভিন্ন রঙের মাছ খুব কাছ থেকে দেখতে পারবেন, শুনতে পারবেন সামুদ্রিক পাখির ডাক।
এছাড়াও মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো পানির নিচে রেস্টুরেন্ট; যা সমুদ্রের ৬ মিটার গভীরে স্বচ্ছ গ্লাস দিয়ে নির্মিত। এ রেস্টুরেন্টে একসঙ্গে ১০-১২ জন অতিথি বসা যায়। বাহারি রঙের সুস্বাদু খাবারের পাশাপাশি স্বচ্ছ কাচ দিয়ে দেখতে পাবেন বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় সামুদ্রিক মাছ।
দেশটির মাথাপিছু আয় হলো ৯ হাজার ১২৬ ডলার; যা সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি। আদিমকাল থেকেই সামুদ্রিক মাছ হচ্ছে দেশটির অর্থনীতির মূলভিত্তি। মালদ্বীপ টুনা পিস জন্য বিখ্যাত। তবে বর্তমানে দেশটির বড় শিল্প হলো পর্যটন। বৈদেশিক আয়ের প্রায় ৭০ শতাংশই আসে পর্যটন থেকে।
বর্তমানে দেশটির জিডিপির প্রবৃদ্ধি হার গড়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি। ১৯৬৫ সালের ২৬ জুলাই মালদ্বীপ ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে এবং ১৯৬৮ সালে ‘সালাতানাতে মালদ্বীপ’ থেকে ‘রিপাবলিক মালদ্বীপে’ পরিণত হয়।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট অফিস থেকে প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জানুয়ারির ১ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে ৫৫০৫৫ জন পর্যটক মালদ্বীপে ভ্রমণ করতে এসেছেন।
যদিও এখনো সরকারিভাবে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। বর্তমান সময়ের জন্য গড় দৈনিক আগমন সংখ্যা ৪ হাজার ৫৮৮ এবং গড় অবস্থান নয় দিন দীর্ঘ।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালের শুরু থেকে ১১ হাজারের এরও বেশি পর্যটক রাশিয়া থেকে ভ্রমণ করেছেন মালদ্বীপে। গত বছর মালদ্বীপে ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি পর্যটক এবং তার আগের বছর ৫৫৫৪৯৪ পর্যটক ভ্রমণ করেছিলেন মালদ্বীপে।
২০১৯ সালে করোনা মহামারির আগে ১.৭ মিলিয়ন পর্যটক মালদ্বীপে ভ্রমণ করেছেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
১২ দিনে ৫০ হাজার পর্যটক মালদ্বীপে
২০২২ সালের প্রথম দুই সপ্তাহে ৫০ হাজারের বেশি পর্যটক মালদ্বীপ ভ্রমণ করছেন। পৃথিবীর অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত দেশ ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। শান্ত ও মনোরম পরিবেশ, পুরাতন এই সমুদ্র সৈকত মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ। যেখানে পানির রং নীল আর বালির রং সাদা। তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা মালদ্বীপের সবগুলো দ্বীপের চারদিকে ঘিরে আছে সাগরের অফুরন্ত জলরাশি।
শ্রীলংকা থেকে প্রায় ৪৫০ মাইল পশ্চিম-দক্ষিণে ১২০০টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত হয় মালদ্বীপ। এর মধ্যে ২৫০টি দ্বীপ ব্যবহারযোগ্য। এতে রয়েছে ২৮টি অ্যাটোল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা মাত্র এক দশমিক পাঁচ মিটার। বিষুবরেখার কাছে অবস্থিত হওয়ায় মালদ্বীপ বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশটিতে মাত্র একটি ঋতু আছে। সারা বছর গড় তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৯৮ বর্গকিলোমিটারের শতভাগ মুসলিম দেশ মালদ্বীপের রাষ্ট্রীয় ভাষা ধিবেহী আর মালদ্বীপীয় রুপাইয়া হলো মুদ্রার নাম।
এশিয়ার সবচেয়ে ছোট এবং দুনিয়ার সবচেয়ে নিচু দেশ মালদ্বীপ। দেশটিতে প্রতি বছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করতে আসে। সূর্যাস্ত যাওয়ার পর ঢেউয়ের তালে তালে জ্বলজ্বলে করতে থাকে দেশটির বালুময় সমুদ্র সৈকত।
সমুদ্রের পানি থেকে বিচ্ছুরিত হয় অদ্ভুত আলো। সে এক অসাধারণ দৃশ্য যা দেখে চোখ বিস্ময়ে আটকে থাকে। এজন্য অনেকের কাছেই হানিমুনের জন্য সবচেয়ে পছন্দের দেশ মালদ্বীপ।
একমাত্র মালদ্বীপেই বিশালাকার সাবমেরিনে করে সমুদ্রের তলদেশে ঘুরে বেড়ানো যায়, পর্যটকদের প্রায় ১৮০ ফুট পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশে নিয়ে যায়। গভীর সমুদ্রের সৌন্দর্য সবাইকে বিমোহিত করে। যেখান থেকে পর্যটনরা সমুদ্রের বিভিন্ন রঙের মাছ খুব কাছ থেকে দেখতে পারবেন, শুনতে পারবেন সামুদ্রিক পাখির ডাক।
এছাড়াও মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো পানির নিচে রেস্টুরেন্ট; যা সমুদ্রের ৬ মিটার গভীরে স্বচ্ছ গ্লাস দিয়ে নির্মিত। এ রেস্টুরেন্টে একসঙ্গে ১০-১২ জন অতিথি বসা যায়। বাহারি রঙের সুস্বাদু খাবারের পাশাপাশি স্বচ্ছ কাচ দিয়ে দেখতে পাবেন বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় সামুদ্রিক মাছ।
দেশটির মাথাপিছু আয় হলো ৯ হাজার ১২৬ ডলার; যা সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি। আদিমকাল থেকেই সামুদ্রিক মাছ হচ্ছে দেশটির অর্থনীতির মূলভিত্তি। মালদ্বীপ টুনা পিস জন্য বিখ্যাত। তবে বর্তমানে দেশটির বড় শিল্প হলো পর্যটন। বৈদেশিক আয়ের প্রায় ৭০ শতাংশই আসে পর্যটন থেকে।
বর্তমানে দেশটির জিডিপির প্রবৃদ্ধি হার গড়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি। ১৯৬৫ সালের ২৬ জুলাই মালদ্বীপ ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে এবং ১৯৬৮ সালে ‘সালাতানাতে মালদ্বীপ’ থেকে ‘রিপাবলিক মালদ্বীপে’ পরিণত হয়।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট অফিস থেকে প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জানুয়ারির ১ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে ৫৫০৫৫ জন পর্যটক মালদ্বীপে ভ্রমণ করতে এসেছেন।
যদিও এখনো সরকারিভাবে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। বর্তমান সময়ের জন্য গড় দৈনিক আগমন সংখ্যা ৪ হাজার ৫৮৮ এবং গড় অবস্থান নয় দিন দীর্ঘ।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালের শুরু থেকে ১১ হাজারের এরও বেশি পর্যটক রাশিয়া থেকে ভ্রমণ করেছেন মালদ্বীপে। গত বছর মালদ্বীপে ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি পর্যটক এবং তার আগের বছর ৫৫৫৪৯৪ পর্যটক ভ্রমণ করেছিলেন মালদ্বীপে।
২০১৯ সালে করোনা মহামারির আগে ১.৭ মিলিয়ন পর্যটক মালদ্বীপে ভ্রমণ করেছেন।