দুই বছরেও সন্ধান মেলেনি মালয়েশিয়া প্রবাসী মিরাজুল মণ্ডলের
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া থেকে
২৪ মে ২০২২, ০০:২৫:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ
গত দুই বছরেও সন্ধান মেলেনি মালয়েশিয়া প্রবাসী পাবনার আটঘোরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের চৌকিবাড়ী গ্রামের দুলাল মণ্ডলের ছেলে মিরাজুল মণ্ডলের। প্রবাসী ছেলেকে ফিরে পেতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিচ্ছেন তার বাবা-মা। কিন্তু খোঁজ মেলেনি ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে নিখোঁজ মিরাজুলের।
পরিবারের একটু সচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-৫৪৯) কোম্পানির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। দেশটিতে পৌঁছর পর মালয়েশিয়ার ইয়াংসিং ইন্ডাস্ট্রিজ-ইপু এসডিএন.বিএইচডি কোম্পানিতে সাধারণ কর্মী হিসেবে যোগ দেন তিনি। দেশটিতে যাওয়ার পর প্রথমদিকে নিয়মিত দেশে টাকা পাঠাতেন ও বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনের খোঁজখবর রাখতেন মিরাজুল মণ্ডল। কিন্তু হঠাৎ করেই ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তার সাথে তার পরিবারের সদস্যদের আর যোগাযোগ হয় না। তার পরিবার বা আত্মীয়স্বজন কেউই জানেন না, মিরাজুলের কী হয়েছে? আদৌ সে বেঁচে আছে কিনা।
মিরাজুলের বাবা দুলাল মণ্ডলের অভিযোগ, মালয়েশিয়া গমনের পর হতে যথারীতি নভেম্বর ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমাদের সাথে যোগাযোগ করাসহ আমাকে তার বেতনের টাকা পাঠাতো। কিন্তু আমার ছেলের বেতন-ভাতা বা চাকরির কোন সমস্যা না থাকলেও মাঝে মাঝে ফোনে আমাকে বলতো তার রোমমেট পাবনার মিলন, কুমিল্লার ফরহাদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সজিব নামে তিনজন তাকে নির্যাতন করত এবং টাকাপয়সা কেড়ে নিত।
এছাড়া তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিত। এরপর ১৭ জানুয়ারি ২০২০ সালে আমার সাথে শেষবার কথা বলার পর থেকেই তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমরাও তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে কোনো সন্ধান পাইনি। তাই তার দাবি মিরাজুলের তিন রোমমেটই তাকে অপহরণ করে রেখেছে।
তার বাবার দাবি- মিরাজুলকে খুঁজে পেতে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা চেয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত হোসেন আলাল। মিরাজুলের সন্ধান চেয়ে বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে ও থানায় লিখিত আবেদন জমা দেয়া হলে সেখান থেকেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি বরং ছেলের সন্ধানে যাতে কোনো মন্ত্রণালয়ে না যাওয়া হয় তার জন্য বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের (আরএল-৫৪৯) কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় হুমকি।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্টরা জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে নিয়োগকারী কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা পেতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই মিরাজুল মণ্ডলের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা জানান।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
দুই বছরেও সন্ধান মেলেনি মালয়েশিয়া প্রবাসী মিরাজুল মণ্ডলের
গত দুই বছরেও সন্ধান মেলেনি মালয়েশিয়া প্রবাসী পাবনার আটঘোরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের চৌকিবাড়ী গ্রামের দুলাল মণ্ডলের ছেলে মিরাজুল মণ্ডলের। প্রবাসী ছেলেকে ফিরে পেতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিচ্ছেন তার বাবা-মা। কিন্তু খোঁজ মেলেনি ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে নিখোঁজ মিরাজুলের।
পরিবারের একটু সচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-৫৪৯) কোম্পানির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। দেশটিতে পৌঁছর পর মালয়েশিয়ার ইয়াংসিং ইন্ডাস্ট্রিজ-ইপু এসডিএন.বিএইচডি কোম্পানিতে সাধারণ কর্মী হিসেবে যোগ দেন তিনি। দেশটিতে যাওয়ার পর প্রথমদিকে নিয়মিত দেশে টাকা পাঠাতেন ও বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনের খোঁজখবর রাখতেন মিরাজুল মণ্ডল। কিন্তু হঠাৎ করেই ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তার সাথে তার পরিবারের সদস্যদের আর যোগাযোগ হয় না। তার পরিবার বা আত্মীয়স্বজন কেউই জানেন না, মিরাজুলের কী হয়েছে? আদৌ সে বেঁচে আছে কিনা।
মিরাজুলের বাবা দুলাল মণ্ডলের অভিযোগ, মালয়েশিয়া গমনের পর হতে যথারীতি নভেম্বর ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমাদের সাথে যোগাযোগ করাসহ আমাকে তার বেতনের টাকা পাঠাতো। কিন্তু আমার ছেলের বেতন-ভাতা বা চাকরির কোন সমস্যা না থাকলেও মাঝে মাঝে ফোনে আমাকে বলতো তার রোমমেট পাবনার মিলন, কুমিল্লার ফরহাদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সজিব নামে তিনজন তাকে নির্যাতন করত এবং টাকাপয়সা কেড়ে নিত।
এছাড়া তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিত। এরপর ১৭ জানুয়ারি ২০২০ সালে আমার সাথে শেষবার কথা বলার পর থেকেই তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমরাও তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে কোনো সন্ধান পাইনি। তাই তার দাবি মিরাজুলের তিন রোমমেটই তাকে অপহরণ করে রেখেছে।
তার বাবার দাবি- মিরাজুলকে খুঁজে পেতে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা চেয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত হোসেন আলাল। মিরাজুলের সন্ধান চেয়ে বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে ও থানায় লিখিত আবেদন জমা দেয়া হলে সেখান থেকেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি বরং ছেলের সন্ধানে যাতে কোনো মন্ত্রণালয়ে না যাওয়া হয় তার জন্য বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের (আরএল-৫৪৯) কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় হুমকি।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্টরা জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে নিয়োগকারী কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা পেতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই মিরাজুল মণ্ডলের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা জানান।