গ্রিসে এক বছরে অর্ধশতাধিক বাংলাদেশির মৃত্যু
মতিউর রহমান মুন্না, এথেন্স (গ্রিস) থেকে
২৭ মে ২০২২, ০০:৪৫:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ
প্রবাসে স্ট্রোক করে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসব মৃত্যু অনেকটাই নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং নানা কারণে মানসিক চাপে হতাশায় স্ট্রোক করেন এসব প্রবাসী। ইউরোপের দেশ গ্রিসেও বেড়েই চলছে বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর সংখ্যা।
এথেন্স দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গ্রিসে ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মোট ১০৯ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৫ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৭ জন এবং ২০২২ সালের সর্বশেষ ৫ মাসে ১৫ জন বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধা মারা গেছেন বিভিন্নভাবে। জরিপে দেখা গেছে এদের মাঝে বেশির ভাগই স্ট্রোকে মৃত্যু।
আঞ্চলিক কমিটি ও বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ দূতাবাস এথেন্সের তত্ত্বাবধানে অনেকের মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী কয়েকজনের মরদেহ গ্রিসেই দাফন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ায় বেশিরভাগ ব্যক্তি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
প্রবাসে মৃত ব্যক্তিদের স্বজন, প্রবাসী বাংলাদেশি ও অভিবাসন খাত-সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ অভিবাসন ব্যয় প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ানোর অন্যতম কারণ। ঋণ নিয়ে বিদেশে গিয়ে টাকা শোধ করার চাপের কারণে অতিরিক্ত কাজ করার প্রবণতা রয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে। অবৈধভাবে থাকা অনেকেই কোন কাজ করার সুযোগ না পেয়ে বেকার অবস্থায় থাকেন। থাকা ও খাবারের টাকা দেশ থেকে নিয়ে পরিশোধ করেন। ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করার কারণে নিয়মিত ঘুমানোর সুযোগ পান না শ্রমিকেরা। এসব কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রবাসীদের অস্বাভাবিক মৃত্যু তদন্তে কোনো উদ্যাগ নেই সরকারের। মৃত্যুর কারণ যাচাই-বাছাই করে দেখা হয় না। প্রবাসী কর্মীদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও নেই কোনো নজরদারি। বছরের পর বছর অস্বাভাবিক মৃত্যু বাড়তে থাকলেও তা প্রতিরোধে সক্রিয় হচ্ছে না সরকার।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
গ্রিসে এক বছরে অর্ধশতাধিক বাংলাদেশির মৃত্যু
প্রবাসে স্ট্রোক করে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসব মৃত্যু অনেকটাই নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং নানা কারণে মানসিক চাপে হতাশায় স্ট্রোক করেন এসব প্রবাসী। ইউরোপের দেশ গ্রিসেও বেড়েই চলছে বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর সংখ্যা।
এথেন্স দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গ্রিসে ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত মোট ১০৯ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৫ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৭ জন এবং ২০২২ সালের সর্বশেষ ৫ মাসে ১৫ জন বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধা মারা গেছেন বিভিন্নভাবে। জরিপে দেখা গেছে এদের মাঝে বেশির ভাগই স্ট্রোকে মৃত্যু।
আঞ্চলিক কমিটি ও বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ দূতাবাস এথেন্সের তত্ত্বাবধানে অনেকের মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী কয়েকজনের মরদেহ গ্রিসেই দাফন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ায় বেশিরভাগ ব্যক্তি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
প্রবাসে মৃত ব্যক্তিদের স্বজন, প্রবাসী বাংলাদেশি ও অভিবাসন খাত-সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ অভিবাসন ব্যয় প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ানোর অন্যতম কারণ। ঋণ নিয়ে বিদেশে গিয়ে টাকা শোধ করার চাপের কারণে অতিরিক্ত কাজ করার প্রবণতা রয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে। অবৈধভাবে থাকা অনেকেই কোন কাজ করার সুযোগ না পেয়ে বেকার অবস্থায় থাকেন। থাকা ও খাবারের টাকা দেশ থেকে নিয়ে পরিশোধ করেন। ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করার কারণে নিয়মিত ঘুমানোর সুযোগ পান না শ্রমিকেরা। এসব কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রবাসীদের অস্বাভাবিক মৃত্যু তদন্তে কোনো উদ্যাগ নেই সরকারের। মৃত্যুর কারণ যাচাই-বাছাই করে দেখা হয় না। প্রবাসী কর্মীদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও নেই কোনো নজরদারি। বছরের পর বছর অস্বাভাবিক মৃত্যু বাড়তে থাকলেও তা প্রতিরোধে সক্রিয় হচ্ছে না সরকার।