Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম

বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া দরকার

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যেভাবে অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি জেঁকে বসেছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়। প্রায় প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি থেকে শুরু করে নির্মাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থ লোপাটের যে ব্যাপক অভিযোগ, তা শিউরে ওঠার মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মতো মহৎ পেশার লোকদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সমাজের প্রতিটি স্তরে কীভাবে ঘুণে ধরেছে।

যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর, সেহেতু সেখানকার অনিয়ম-দুর্নীতি শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে প্রভাব ফেলাই স্বাভাবিক এবং তা ফেলছেও। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেবল যে আর্থিক অনিয়ম-দুর্নীতি জেঁকে বসেছে তা-ই নয়, পছন্দের শিক্ষার্থীকে নম্বর বাড়িয়ে দেয়া, ভিন্নমতের শিক্ষার্থীর নম্বর কমিয়ে দেয়া, ফার্স্ট-সেকেন্ড বানানোর লোভ দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার, এমনকি নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির মতো ন্যক্কারজনক বিষয়ও মহামারী আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় জাতীয় স্বার্থে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার বিকল্প নেই।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে চিরকুট দিয়ে ভর্তি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং বশেমুরবিপ্রবি’র উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, এমনকি শিক্ষার্থীদের গালাগালি ও বাজে ব্যবহারের মতো জঘন্য অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের এমন আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সর্বোচ্চ পর্যায়ের বুদ্ধিজীবীদের এমন ব্যবহার জাতির জন্য অবশ্যই অশনিসংকেত।

এটা সত্য, জাতি হিসেবে সব ক্ষেত্রে পচনেরই লক্ষণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন অনিয়ম। তবে রাষ্ট্রের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি জেঁকে বসলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বা এর বাইরে থাকে কী করে! আমরা এখন এমন একটি পর্যায়ে অবস্থান করছি, যখন একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে সরকারের শীর্ষমহল।

এ পর্যায়ে এসে কোনো ক্ষেত্রেই দুর্নীতি-অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়ার সুযোগ নেই। তার চেয়েও বড় কথা, অনিয়ম-দুর্নীতি করে পার পাওয়া যাবে না- এটি নিশ্চিত করা দরকার সবার আগে। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেই বললেই চলে। অভিযোগ উঠলে ইউজিসি তদন্ত করে; কিন্তু ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। এভাবে চললে অনিয়ম বন্ধ হবে না। সরকারের উচিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেয়া। তাহলেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, অন্যথায় নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম