Nagad-Fifa-WorldCup
জার্সি নাম্বার ১০, সেরারা কেন বেছে নেন এটি?
jugantor
জার্সি নাম্বার ১০, সেরারা কেন বেছে নেন এটি?

  স্পোর্টস ডেস্ক  

০২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:৩৮:৫৫  |  অনলাইন সংস্করণ

জার্সি নাম্বার ১০। এই নাম্বারের জার্সি পরে খেলে নাম-যশ পেয়েছেন এমন ফুটবলারের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। অনেকের মতে, এই জার্সি শ্রেষ্ঠ হওয়ার অনুপ্রেরণা তৈরি করে। এই নাম্বারের জার্সিকে ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে সম্মানজনক বলেও মনে করেন কেউ কেউ। কারণও আছে। এখনো বিশ্বের সেরা কিংবদন্তি ফুটবলার হিসেবে ধরা হয় আর্জেন্টিনার ম্যারাডোনা বা ব্রাজিলের পেলেকে। দুজনের গায়েই চেপেছিল ১০ নাম্বার জার্সি। পেলেই প্রথম ১০ নাম্বার জার্সিকে প্রচারে এনেছিলেন।

এখন প্রশ্ন হলো- কেন বিশ্বের সেরা ফুটবলাররা এই নাম্বারের জার্সিকেই সবার আগে বেছে নিতে চান? মনে করা হয় এর অন্যতম কারণ পেলে ও ম্যারাডোনা।

অনেক দিন আগে থেকেই ১০ নাম্বার জার্সি পরে মাঠে নামেন সেরারা। আর সেই কারণে নতুন প্রজন্মের ফুটবলারদেরও এই সংখ্যার জার্সি পরার প্রতি রয়েছে বিশেষ টান। তবে অনেক ক্ষেত্রে তা সম্ভবও হয় না। কারণ স্বাভাবিকভাবেই দলে এই নম্বরের জার্সি কারো কাছে না থাকলে তবেই অন্য কেউ এটাকে বেছে নিতে পারেন।

অনেকেই মনে করেন, আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ফুটবলার। অনেকে তাকে ইতিহাসের অন্যতম সেরা বলেও মনে করেন। তার জার্সিতেও রয়েছে ওই একই সংখ্যা। কিন্তু মেসি কেন ১০ নাম্বার জার্সিকেই বেছে নিলেন? তারও কি কোনো অনুপ্রেরণা ছিল? আসলে মেসি ১০ নাম্বার জার্সি পরে খেলা শুরুই করেননি। যখন তিনি বার্সেলোনার হয়ে প্রথম দলে খেলতে শুরু করেন, তখন তার জার্সির নাম্বার ছিল ৩০। এর কয়েক বছর পর যখন রোনালদিনহো দল ছাড়েন তখন তাকে ১০ নাম্বার জার্সি দেওয়া হয়। রোনালদিনহোর মতোই দলের অন্যতম স্তম্ভ মেনে নিয়ে তাকে ওই জার্সি দেওয়া হয়েছিল।

পেলে-ম্যারাডোনা-মেসি ছাড়াও যে সেরারা ১০ নাম্বার জার্সি পরেছেন তারা হলেন- জুয়ান রোমান রিকলমে, মিশেল প্লাতিনি, জোহান ক্রুইফ, ফেরেঙ্ক পুসকাস, জিনেদিন জিদান, রোনালদিনহো, রিভালদো, ওয়েন রুনি, আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো, ফ্রান্সেসকো টোট্টি, সার্জিও আগুয়েরো, নেইমার, ফিলিপে কুতিনহো, রবার্তো বাজ্জিয়োসহ অনেকে।

তবে এটাও সত্য ১০ নাম্বার জার্সি পরেই যে সব সময় বৈগ্রহিক খেলোয়াড় হওয়া যায়, এমনটা নয়। তার অন্যতম উদাহরণ রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব। রিয়াল মাদ্রিদের জন্য ১০ নাম্বার জার্সি বরাবর ‘অভিশাপ’ হয়েই ফিরে এসেছে।

বর্তমান শতকের শুরুতে রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ দলে একটি নতুন নীতি প্রয়োগ করেন। তিনি চেয়েছিলেন এমন এক দল তৈরি করতে যার খেলোয়াড়রা বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করবে।

প্রতি বছর দলের উন্নতির জন্য একজন সেরা খেলোয়াড় বাছাই করতেন পেরেজ। এই দল এবং এই খেলোয়াড়দের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গ্যালাক্টিকোস’।

প্রথম দিকে গ্যালাক্টিকোসের হয়ে ১০ নাম্বার জার্সি পরে খেলেন লুই ফিগো। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার গায়ে ছিল ওই জার্সি। কিন্তু ফিগোর পরে রিয়ালের ১০ নাম্বার জার্সিতে আর কেউ সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি।

‘গ্যালাক্টিকোস’ যুগ শেষ হওয়ার পরে, রিয়াল মাদ্রিদের অনুরাগীরা বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে ১০ নাম্বার জার্সি ক্লাবের জন্য অভিশপ্ত। কারণ অনেক ফুটবলার ১০ নাম্বার জার্সি পরে ব্যর্থ হয়েছিলেন। এই খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন লাসানা দিয়ারা, মেসুত ওজিল, ওয়েসেলি স্নাইডার, হামেস রদ্রিগেজ এবং রবিনহো। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার দল ছেড়ে বেরিয়েও গিয়েছিলেন।

পরে আবার এ ধারণাকে ভ্রান্ত করে দেন ক্রোয়েশিয়ার লুকা মডরিচ। বহু বছর ধরে ১৯ নাম্বার জার্সি পরে খেলার পর তিনি ১০ নাম্বার জার্সি গায়ে চাপান। এরপর তিনি রিয়াল মাদ্রিদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার হয়ে ওঠেন। এর এক বছর পরে তিনি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ‘বাঁল দ্যর’ জিতেছিলেন।

মনে করা হয়, ১০ নাম্বার জার্সি গায়ে চাপালেই সেই ফুটবলারের কাছে অনেক কিছু আশা করে থাকেন দর্শকরা।

কখনো কখনো অন্য ফুটবলার ১০ নাম্বার জার্সি না চাইলে একজন নবাগতকে ওই জার্সি বাধ্য হয়ে নিতে হয়। পরে তিনিই হয়ত হয়ে উঠতে পারেন অন্যতম সেরা।

পর্তুগালের রোনালদোমাঠে নামেন ৭ নাম্বার জার্সি গায়ে চাপিয়ে। তার মতো যদি আরও কেউ এই জার্সি পরে বিখ্যাত হন, তা হলে ৭ নাম্বার জার্সিও সেরা জার্সি হিসেবে ভবিষ্যতে গণ্য হতে পারে।

শুধু ফুটবল নয়, ক্রিকেটের সেরাদের গায়েও উঠেছে এই সংখ্যার জার্সি। তার অন্যতম উদাহরণ শচীন তেন্ডুলকার। এছাড়াও পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যালান ডোনাল্ডের মতো খেলোয়াড়ও মাঠে নেমেছেন ১০ নাম্বার জার্সি পরে।খবর: আনন্দবাজার পত্রিকার।

Nagad-Fifa-WorldCup

জার্সি নাম্বার ১০, সেরারা কেন বেছে নেন এটি?

 স্পোর্টস ডেস্ক 
০২ ডিসেম্বর ২০২২, ০৭:৩৮ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

জার্সি নাম্বার ১০। এই নাম্বারের জার্সি পরে খেলে নাম-যশ পেয়েছেন এমন ফুটবলারের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। অনেকের মতে, এই জার্সি শ্রেষ্ঠ হওয়ার অনুপ্রেরণা তৈরি করে। এই নাম্বারের জার্সিকে ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে সম্মানজনক বলেও মনে করেন কেউ কেউ।  কারণও আছে। এখনো বিশ্বের সেরা কিংবদন্তি ফুটবলার হিসেবে ধরা হয় আর্জেন্টিনার ম্যারাডোনা বা ব্রাজিলের পেলেকে। দুজনের গায়েই চেপেছিল ১০ নাম্বার জার্সি। পেলেই প্রথম ১০ নাম্বার জার্সিকে প্রচারে এনেছিলেন।

এখন প্রশ্ন হলো- কেন বিশ্বের সেরা ফুটবলাররা এই নাম্বারের জার্সিকেই সবার আগে বেছে নিতে চান? মনে করা হয় এর অন্যতম কারণ পেলে ও ম্যারাডোনা।

অনেক দিন আগে থেকেই ১০ নাম্বার জার্সি পরে মাঠে নামেন সেরারা। আর সেই কারণে নতুন প্রজন্মের ফুটবলারদেরও এই সংখ্যার জার্সি পরার প্রতি রয়েছে বিশেষ টান। তবে অনেক ক্ষেত্রে তা সম্ভবও হয় না। কারণ স্বাভাবিকভাবেই দলে এই নম্বরের জার্সি কারো কাছে না থাকলে তবেই অন্য কেউ এটাকে বেছে নিতে পারেন।

অনেকেই মনে করেন, আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ফুটবলার। অনেকে তাকে ইতিহাসের অন্যতম সেরা বলেও মনে করেন। তার জার্সিতেও রয়েছে ওই একই সংখ্যা। কিন্তু মেসি কেন ১০ নাম্বার জার্সিকেই বেছে নিলেন? তারও কি কোনো অনুপ্রেরণা ছিল? আসলে মেসি ১০ নাম্বার জার্সি পরে খেলা শুরুই করেননি। যখন তিনি বার্সেলোনার হয়ে প্রথম দলে খেলতে শুরু করেন, তখন তার জার্সির নাম্বার ছিল ৩০। এর কয়েক বছর পর যখন রোনালদিনহো দল ছাড়েন তখন তাকে ১০ নাম্বার জার্সি দেওয়া হয়। রোনালদিনহোর মতোই দলের অন্যতম স্তম্ভ মেনে নিয়ে তাকে ওই জার্সি দেওয়া হয়েছিল।

পেলে-ম্যারাডোনা-মেসি ছাড়াও যে সেরারা ১০ নাম্বার জার্সি পরেছেন তারা হলেন- জুয়ান রোমান রিকলমে, মিশেল প্লাতিনি, জোহান ক্রুইফ, ফেরেঙ্ক পুসকাস, জিনেদিন জিদান, রোনালদিনহো, রিভালদো, ওয়েন রুনি, আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো, ফ্রান্সেসকো টোট্টি, সার্জিও আগুয়েরো, নেইমার, ফিলিপে কুতিনহো, রবার্তো বাজ্জিয়োসহ অনেকে।

তবে এটাও সত্য ১০ নাম্বার জার্সি পরেই যে সব সময় বৈগ্রহিক খেলোয়াড় হওয়া যায়, এমনটা নয়। তার অন্যতম উদাহরণ রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব। রিয়াল মাদ্রিদের জন্য ১০ নাম্বার জার্সি বরাবর ‘অভিশাপ’ হয়েই ফিরে এসেছে।

বর্তমান শতকের শুরুতে রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ দলে একটি নতুন নীতি প্রয়োগ করেন। তিনি চেয়েছিলেন এমন এক দল তৈরি করতে যার খেলোয়াড়রা বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করবে।

প্রতি বছর দলের উন্নতির জন্য একজন সেরা খেলোয়াড় বাছাই করতেন পেরেজ। এই দল এবং এই খেলোয়াড়দের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গ্যালাক্টিকোস’।

প্রথম দিকে গ্যালাক্টিকোসের হয়ে ১০ নাম্বার জার্সি পরে খেলেন লুই ফিগো। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার গায়ে ছিল ওই জার্সি। কিন্তু ফিগোর পরে রিয়ালের ১০ নাম্বার জার্সিতে আর কেউ সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি।

‘গ্যালাক্টিকোস’ যুগ শেষ হওয়ার পরে, রিয়াল মাদ্রিদের অনুরাগীরা বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে ১০ নাম্বার জার্সি ক্লাবের জন্য অভিশপ্ত। কারণ অনেক ফুটবলার ১০ নাম্বার জার্সি পরে ব্যর্থ হয়েছিলেন। এই খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন লাসানা দিয়ারা, মেসুত ওজিল, ওয়েসেলি স্নাইডার, হামেস রদ্রিগেজ এবং রবিনহো। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার দল ছেড়ে বেরিয়েও গিয়েছিলেন।

পরে আবার এ ধারণাকে ভ্রান্ত করে দেন ক্রোয়েশিয়ার লুকা মডরিচ। বহু বছর ধরে ১৯ নাম্বার জার্সি পরে খেলার পর তিনি ১০ নাম্বার জার্সি গায়ে চাপান। এরপর তিনি রিয়াল মাদ্রিদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার হয়ে ওঠেন। এর এক বছর পরে তিনি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ‘বাঁল দ্যর’ জিতেছিলেন।

মনে করা হয়, ১০ নাম্বার জার্সি গায়ে চাপালেই সেই ফুটবলারের কাছে অনেক কিছু আশা করে থাকেন দর্শকরা।

কখনো কখনো অন্য ফুটবলার ১০ নাম্বার জার্সি না চাইলে একজন নবাগতকে ওই জার্সি বাধ্য হয়ে নিতে হয়। পরে তিনিই হয়ত হয়ে উঠতে পারেন অন্যতম সেরা।

পর্তুগালের রোনালদো মাঠে নামেন ৭ নাম্বার জার্সি গায়ে চাপিয়ে। তার মতো যদি আরও কেউ এই জার্সি পরে বিখ্যাত হন, তা হলে ৭ নাম্বার জার্সিও সেরা জার্সি হিসেবে ভবিষ্যতে গণ্য হতে পারে।

শুধু ফুটবল নয়, ক্রিকেটের সেরাদের গায়েও উঠেছে এই সংখ্যার জার্সি। তার অন্যতম উদাহরণ শচীন তেন্ডুলকার। এছাড়াও পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যালান ডোনাল্ডের মতো খেলোয়াড়ও মাঠে নেমেছেন ১০ নাম্বার জার্সি পরে। খবর: আনন্দবাজার পত্রিকার।
 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

ঘটনাপ্রবাহ : ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২

২৮ ডিসেম্বর, ২০২২