শেষ পাতা

একটি দল দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টে উঠেপড়ে লেগেছে: তারেক রহমান

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

একটি দল দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টে উঠেপড়ে লেগেছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সংগৃহীত ছবি

একটি দল দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘দেশ অত্যন্ত সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি গত এক বছরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা প্রকাশ্যে হুমকি দেন যে, ফেব্রুয়ারি মাসে যে প্রত্যাশিত নির্বাচন রয়েছে তারা তা হতে দেবে না। বাধাগ্রস্ত করবে। আসলে একটি দল-গোষ্ঠী বা কিছু ব্যক্তি এই দেশকে, দেশের মানুষের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।’ শুক্রবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’-শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন।

বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘এই হামলা ষড়যন্ত্রের অংশ। যারা দেশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করতে চায়, দেশের সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করতে চায়, দেশের স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করতে চায়-তারা যে ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে, আজকে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হয়েছে। কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে একই ভাবে বিএনপির প্রার্থীকে গুলি করা হয়েছে।’

এ পরিস্থিতিতে জাতীয়তাবাদী শক্তির সর্বোচ্চ ঐক্যের প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দল ছোট-বড় বিষয় নয়, যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের অস্তিত্বে, বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন, সবার আগে বাংলাদেশ-এই নীতিতে বিশ্বাস করেন সবাইকে অতীতের যে কোনো সময় থেকে সবচেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পাশাপাশি কেউ যাতে বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ না পায়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।’

প্রশাসন চাইলে হাদিকে গুলিবর্ষণের ঘটনার তদন্তে বিএনপি সহযোগিতা করবে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। আর দোষীদের খুঁজে বের করে আইন অনুযায়ী তাদের যেন শাস্তি দেওয়া হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘যে কোনো মূল্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। দেশের মানুষ যাতে তাদের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে পারে, তার জন্য সদা সর্বদা সচেষ্ট ও সতর্ক থাকতে হবে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপরে যা হয়েছে, কয়েকদিন আগে আমাদের এরশাদ উল্লাহর ওপরে যা হয়েছে-এর বিরুদ্ধে যদি আমাদের অবস্থান নিতে হয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যদি অবস্থান নিতে হয়-যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যে কোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

উদ্বোধনী বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি সফল ঘোষণা হয়েছে। যেটাকে আমরা নির্বাচনি তফসিল বলছি। এই তফসিল ঘোষণায় অনেকে ভারাক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু স্বাগত জানাতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা স্বাগত জানিয়েছি, সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছি। আমরা বলেছি, এজন্যই গণ-অভ্যুত্থানের যত প্রত্যাশা তার মধ্যে প্রধান ও প্রাথমিক প্রত্যাশা ছিল জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটাধিকার প্রয়োগ করা। এজন্যই তফসিল ঘোষণা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছেন নো পিআর, নো ইলেকশন; কেউ কেউ বলেছেন আগে স্থানীয় সরকার ইলেকশন না হলে কোনো ইলেকশন নয়। আবার কেউ কেউ বলেছেন, একই দিনে গণভোট আর সংসদ নির্বাচন হলে আমরা মানি না। কেউ কেউ বলেছেন, ২০২৯ সালের দিকে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করেন। আমি কারও নাম নিতে চাই না, এরা সবাই গণতন্ত্রের বিপক্ষের শিবির। তারা নিজেদের মতো করে গণতন্ত্র চান, তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আলাদা।’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ।