নগর-মহানগর

কে এই অসীম সাহসী ওসমান হাদি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কে এই অসীম সাহসী ওসমান হাদি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি। অসীম সাহসী এক জুলাই যোদ্ধা। জুলাই আন্দোলনে যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ভোটের মাঠেও সক্রিয় ছিলেন। প্রচারণা প্রস্তুতির প্রাক্কালে শুক্রবার দুপুরে সন্ত্রাসী হামলায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর অনেকের মধ্যে জানার আগ্রহ-কে এই ওসমান হাদি।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, হাদির গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটিতে। বাবা প্রয়াত মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল হাদি। নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসায় হাদির শিক্ষাজীবনের শুরু। পরে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০২৪ সালে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি অনেকের কাছে বিশেষ পরিচিতি পান। এরপর টকশো ছাড়াও ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে দেওয়া ঝাঁজাল বক্তব্যে তিনি অনেকের কাছে হয়ে ওঠেন অনন্য এক সাহসী মুখের প্রতিচ্ছবি।

জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার লড়াইয়ে তিনি এক সময় প্রাইভেট পড়িয়েছেন। পরে কোচিং সেন্টার সাইফুরসসহ বিভিন্ন কোচিংয়ে শিক্ষকতাও করেন। সবশেষ ইউনিভার্সিটি অব স্কলারস নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওসমান হাদি শিক্ষকতা করছিলেন বলে ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা জানিয়েছেন। মাদ্রাসায় পড়ালেখা করায় এবং ভাষা ও পোশাকের কারণে তিনি শিবির বা হিজবুত তাহরিরের কিনা, সেই সন্দেহ অনেকে প্রকাশ করতেন। তবে তার সহকর্মীদের দাবি, জুলাই অভ্যুত্থানের আগে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না হাদি; তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কাজ করতেন, একাধিক বইও লিখেছেন।

শিক্ষাজীবন থেকেই তিনি প্রতিবাদী হয়ে উঠেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর ওসমান হাদির হাত ধরে গড়ে ওঠে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। ‘সব ধরনের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ’ সংগঠনটির ঘোষিত লক্ষ্য। অন্যায় অপরাধের বিরুদ্ধে এ মঞ্চ থেকে দিনের পর দিন প্রতিবাদ-নিন্দা জানানো হয়েছে। এবারের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বাধীন প্যানেল থেকে ভোট করে ইনকিলাব মঞ্চের ফাতিমা তাসনিম জুমা মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন।

সম্প্রতি নির্বাচনি প্রচারণা করতে রাজধানীর ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যান হাদি। ওই সময় তিনি যুগান্তরকে বলেন, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা তার জন্য অনেক দোয়া করেছেন। কারণ দীর্ঘদিন তিনি শিক্ষকতাও করছেন। শিক্ষা মহান পেশা। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী তাকে খুব টানে।

এদিকে নভেম্বরে হাদি ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি ফোন নম্বর থেকে তাকে ফোন এবং মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তার বাড়িতে আগুন দেওয়া এবং মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। ওই পোস্টে তিনি আরও লেখেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ সমর্থকরা তাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখছে। ‘জীবননাশের আশঙ্কা’ সত্ত্বেও তিনি ‘ইনসাফের লড়াই’ থেকে পিছিয়ে যাবেন না।