Logo
Logo
×

অটোটেক

সৌন্দর্য আর গতির অনন্য সমন্বয় হায়াবুসা

Icon

মো. আবদুস সালিম

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সৌন্দর্য আর গতির অনন্য সমন্বয় হায়াবুসা

মোটরবাইক ‘হায়াবুসা’। সংগৃহীত ছবি

দুবাই মোটর শোতে সুজুকি প্রদর্শন করেছে তাদের কিংবদন্তি মোটরবাইক ‘হায়াবুসা’,-এর সোনালি সংস্করণ। ঝলমলে গোল্ডেন ফিনিশিং আর চমৎকার কারুকাজে সাজানো এ বাইকটির দাম প্রায় সাত লাখ দিরহাম, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দুই কোটি ৩৩ লাখের বেশি। শুধু সোনালি ফিনিশিংয়ের কাজেই ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫৬ হাজার দিরহাম। বাইকটির ৩৬০ সাইজের টায়ার এতটাই প্রশস্ত, তা বিলাসবহুল স্পোর্টসকার বুগাটির চেয়েও বড়।

দেখতে যেমন মনোমুগ্ধকর, তেমনি কর্মক্ষমতায়ও এটি এক সত্যিকারের রেসিং দানব। ১৩৪০ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন এ হায়াবুসা পাওয়া যাচ্ছে পার্ল ভিগর ব্লু, মেটালিক ম্যাট ব্ল্যাক, এবং মেটালিক থান্ডার গ্রে, এই তিন রঙে। অ্যারোডাইনামিক বা বায়ুগত নকশা এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি বাইকটি এতটাই দ্রুত ও নিখুঁত, একে তুলনা করা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী পাখি পেরিগ্রিন ফ্যালকন বা বহেরি বাজপাখির সঙ্গে। বাইকটির ফিনিশিং ও ডিজাইন সম্পন্ন করেছেন বিশ্ববিখ্যাত অটোমোটিভ আর্টিস্ট মি. ড্যানি, যার হাতে হায়াবুসা পরিণত হয়েছে এক অনন্য শিল্পকর্মে।

ইঞ্জিনের বৈশিষ্ট্য ও কর্মক্ষমতা এ বাইকটি চালিত হয় লিকুইড-কুলড ডিওএইচসি (DOHC) ইঞ্জিন দ্বারা, যার সঙ্গে রয়েছে ৪-সিলিন্ডার ফুয়েল ইনজেকশন সিস্টেম। ইঞ্জিনটি নিয়ন্ত্রিত হয় সুজুকির রাইড-বাই-ওয়্যার ৪৩ মিলিমিটার ইলেকট্রনিক থ্রটল বডি দ্বারা, যা গতি ও প্রতিক্রিয়ায় আনে নিখুঁত ভারসাম্য। শক্তি সঞ্চার ও টর্ক আউটপুট বাড়াতে এতে যুক্ত করা হয়েছে চারটি অতিরিক্ত সুজুকি সাইড-ফিড ইনজেক্টর (S-SFI)। পাশাপাশি রয়েছে দুটি সুজুকি র‌্যাম এয়ার ডাইরেক্ট (SRAD) ইনটেক ডাক্ট, যা উচ্চচাপের বাতাস ব্যবহার করে পারফরম্যান্স ও গতি বৃদ্ধি করে। নিজস্ব এয়ার ক্লিনার সিস্টেম নিশ্চিত করে পরিষ্কার ও পর্যাপ্ত বায়ু সরবরাহ। ইঞ্জিনের কম্পন কমাতে ও স্থায়িত্ব বাড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে গিয়ার-চালিত ব্যালেন্সার শ্যাফ্ট। ওজন কমানোর জন্য পিস্টন কানেক্টিং রড ও ক্র্যাঙ্কশ্যাফ্ট ডিজাইন করা হয়েছে হালকা ও টেকসই উপকরণে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত উপাদান, যা দীর্ঘস্থায়িত্ব ও দক্ষতা নিশ্চিত করে। ইঞ্জিনটি সর্বোচ্চ ১৯০ পিএস শক্তি উৎপাদন করে ৯,৭০০ আরপিএমে। এর মাইলেজ প্রতি লিটারে গড়ে প্রায় ১৭ কিলোমিটার, আর জ্বালানি ট্যাঙ্কের ধারণক্ষমতা ২০ লিটার। টিউবলেস টায়ারযুক্ত সুজুকি হায়াবুসার মোট ওজন প্রায় ২৬৬ কেজি।

চ্যাসিসের ধরন

হায়াবুসার চ্যাসিসে ব্যবহার করা এগুলোর সবই সঠিক ফরম্যাটে তথ্য জানান দেয়। এতে রয়েছে কম্পিউটার এরিয়া নেটওয়ার্ক (ক্যান) স্টাইলের তারের সমন্বয় এবং নানামুখী তিন অক্ষের মেজারমেন্ট ইউনিট। আরও রয়েছে একটি অ্যান্টিলক ব্রেক সিস্টেম বা এবিএস। এটা মোশন ট্র্যাক ব্রেক সিস্টেম, স্লো ডিপেনডেন্ট কন্ট্রোল সিস্টেম এবং হিল হোল্ড কন্ট্রোল সিস্টেমের সমন্বয়ে কাজ করে। হ্যান্ডেলবারটি এমনভাবে লাগানো হয়েছে, যার ফলে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে বাইকটি চালানো যায়। দীর্ঘ স্থায়িত্বের জন্য রয়েছে সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক ড্র-এলইডি লাইট।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সুজুকি যে ধরনের গাড়ি তৈরি করছে, তা একটি বিশেষ স্থান ধরে রাখার জন্য রীতিমতো কিংবদন্তি। ১৯৯৯ সালে হায়াবুসার যাত্রা শুরু হলে ওই সময়েই এটা বিশ্বের দ্রুততম মোটরবাইক হিসাবে স্বীকৃতি পায়। সুজুকি এখন পরবর্তী প্রজন্মের হায়াবুসা নিয়েও কাজ করছে। এর দ্বিতীয় প্রজন্মের বাইক উন্মোচন করা হয়েছিল ২০০৮ সালে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম