Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ইন্টারনেট বন্ধ করে হত্যা-নির্যাতন

জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

জুলাই আন্দোলনে নির্যাতন ও গণহত্যার তথ্য গোপনের অসৎ উদ্দেশ্যে আওয়ামী সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল। ওই সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তখন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন জুনায়েদ আহমেদ পলক। এ দুজন ছিলেন ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে হামলা, হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতন চালানোর মাস্টারমাইন্ড। তখন পলক বলেছিলেন, এমনি এমনিই ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর তদন্তে জানা গেল, এটি এমনি এমনি ছিল না। সবকিছু করা হয় পরিকল্পিতভাবে। সবকিছু ছিল স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে।

জুলাই গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড হিসাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুদণ্ডাদেশের পর প্লট দুর্নীতি মামলায়ও তাকে পৃথকভাবে ২৬ বছরের সাজা দেওয়া হয়। একটি মামলায় জয়কেও সাজা দেওয়া হয়। এবার জয়ের বিরুদ্ধে এলো জুলাই গণহত্যার অভিযোগ। আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ ও উসকানি দেওয়াসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। জয়ের সঙ্গে আসামির তালিকায় রয়েছেন পলকও। তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়েছে।

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বৃহস্পতিবার এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন। জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ও পলককে এ মামলায় ট্রাইব্যুনালে হাজিরের আবেদনও করেন তিনি।

প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে মামলায় ‘পলাতক’ থাকায় জয়ের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে এ মামলার আসামি হিসাবে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী তারিখ ১০ ডিসেম্বর। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন-বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আনিসুল-সালমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল : জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা অপর এক মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করেন এবং তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার আবেদন করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কারাগারে আছেন। তাদের ১০ ডিসেম্বর হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন : জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই আবেদন করেন। এ মামলায় আসামিপক্ষের বক্তব্য শোনার জন্য ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এ মামলার দুই আসামি গ্রেফতার আছেন। তারা হলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।

তাদের বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। অপর দুই আসামি পলাতক। তারা হলেন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান। তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসাবে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন মো. আমির হোসেন। এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম