Logo
Logo
×

বিএনপি

এমন কোনো পরিস্থিতি নাই নির্বাচন ব্যাহত হবে, সম্ভাবনাও নেই: ফখরুল

Icon

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

এমন কোনো পরিস্থিতি নাই নির্বাচন ব্যাহত হবে, সম্ভাবনাও নেই: ফখরুল

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: যুগান্তর

দেশে একটা নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি হয়েছে এবং কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির দিকে অথবা মধ্যবর্তী সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে— এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি ভুলে একটি সুন্দর, ভালোবাসার দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

নির্বাচন ব্যাহত হওয়ার আর কোনো পরিস্থিতি নেই বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা যথেষ্ট উপযোগী রয়েছে। ভালো আছে। কারণ এখন আর এমন কোনো পরিস্থিতি নাই যেখানে নির্বাচন ব্যাহত হবে। সেটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে ঠাকুরগাঁও আইনজীবী সমিতির হলরুমে আইনজীবীদের সঙ্গে নির্বাচন ও রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।

বড় দল হিসেবে একাধিক প্রার্থীর প্রতিযোগিতা নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এটা একটা বহমান নদীর মতো। এখানে চারটা-পাঁচটা করে ক্যান্ডিডেট থাকে। কিছু তো সমস্যা হবে। এটা বরাবর হয়ে আসছে, কোনো সমস্যা নাই। এটা হওয়া মানেই হচ্ছে বোঝা যায় যে, এটি একটি বড় রাজনৈতিক দল।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত ছয়টি কমিশনের মাধ্যমে রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক পরিবর্তনের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি জানান, দেশ এখন ‘ফ্যাসিজম, কর্তৃত্ববাদী একটা অবস্থা থেকে ডেমোক্রেসি ট্রানজেকশন অর্থাৎ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে।’

দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ব্যবস্থা ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ তৈরি করবে এবং নিম্নকক্ষকে এককভাবে ক্ষমতাসীন হতে দেবে না।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুই টার্মের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হওয়া যাবে না। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য নিয়ে আসা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ওঠা ‘সমঝোতার মানুষ’ সমালোচনার জবাব দেন মির্জা ফখরুল। তিনি প্রশ্ন তোলেন, আর কতদিন যুদ্ধ করব? আর কতদিন মারামারি করব, আর কতদিন আমরা হিংসা, খুন, জখম এসবের মধ্যে থাকব? আমাদের একটা জায়গায় আসা উচিত, এতে আমাদের সমাজটাকে আমরা একটা শান্তির মধ্যে নিতে পারব।

এ সময় তিনি কারাবন্দি খালেদা জিয়ার প্রথম প্রতিক্রিয়ার কথা জানান। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর অসুস্থ খালেদা জিয়া একটি ছোট্ট ড্রাফটে তার সংশোধনী বসিয়েছিলেন। সেই খসড়ার প্রথম লাইনটি ছিল-

‘প্রথম রাইটটা লেখবা এখন আর কোনো প্রতিহিংসা নয়, প্রতিশোধ নয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেখেন কত উঁচুমনের নেতা। এত ভয়াবহ ঘটনা, প্রায় ২০০০ ছাত্র, নারী, শিশু নিহত হয়েছেন। ৬ বছর ধরে জেলে। প্রথম কথাই বললেন আর কোনো প্রতিহিংসা নয়। প্রতিশোধ নয়। আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সুন্দর ভালোবাসার দেশ গড়ব।’ তিনি এটিকে নেলসন ম্যান্ডেলার মতো নেতাদের কণ্ঠস্বর উল্লেখ করে ‘ইউনিক’ বলে আখ্যায়িত করেন।

দীর্ঘ ১৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনের কষ্টের কথা স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি জেলের পর জেলে গিয়েছি। ১৫ বছর কষ্ট করেছি কিন্তু আশা ছাড়িনি... আমি এটা বিশ্বাস করি, আমি যদি লড়াই করি, চলতে থাকি তাহলে নিঃসন্দেহে একদিন না একদিন বিজয় আসবেই।

নতুন প্রজন্মের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, আমাদের উচিত এ ধরনের ইয়াং ছেলেদের স্বাগত জানানো। কারণ আমাদের পরে নিউ জেনারেশন দরকার হবে, যারা প্রকৃত অর্থে দেশকে কিছু দিতে পারবে।

মতবিনিময় সভায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক মকদুম সাব্বির মৃদুল, পিপি মো. আব্দুল হালিমসহ বিভিন্ন ঘরোনার আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম