নাম পরিবর্তন হচ্ছে ইউজিসির
প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির অধীনে কাজ করবে নতুন কমিশন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নাম পরিবর্তনসহ নানা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। এ নিয়ে একটি খসড়া অধ্যাদেশ তৈরি করছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সুপারিশগুলো অধ্যাদেশ আকারে অনুমোদিত হলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কোনো মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে সরাসরি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করবে।
ইউজিসির নাম পরিবর্তনের দুটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। একটি ‘বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন’ অপরটি ‘উচ্চশিক্ষা কমিশন’। এছাড়া খসড়া অধ্যাদেশে প্রস্তাবিত কমিশনের কাঠামো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার রূপরেখা থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে আইনের তেমন কোনো পরিবর্তন না হলেও কাজের পরিধি বাড়বে। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পাবে। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপযুক্ত অভিজ্ঞ শিক্ষক, গবেষক এবং প্রকাশকদের নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করা হবে।
এ বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএমএ ফয়েজ যুগান্তরকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে নানা বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা প্রধান উপদেষ্টার অভিপ্রায়ে বেশকিছু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা অধ্যাদেশ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সুপারিশগুলো অধ্যাদেশ আকারে অনুমোদিত হলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কোনো মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে সরাসরি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করবে। নতুন প্রস্তাবিত আইনে আমাদের কাজের পরিধি এবং স্বাধীনতা বৃদ্ধি পাবে। আমাদের শিরোনামে ‘মঞ্জুরি’ শব্দটি রাখব না। এতে মনে হয় আমরা শুধু অর্থ লেনদেন করি।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিলে প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাঠামো পরিবর্তনের অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। সে আলোকে কমিশন একটি খসড়া সংশোধনী অধ্যাদেশ তৈরি করা হয়েছে। এতে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি নিয়ে একটি টাস্কফোর্স্ক গঠন করা হবে। এছাড়া প্রস্তাবিত কমিশন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, শিক্ষাদান ও গবেষণা ইত্যাদি মান নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বিশ্ব প্রতিযোগিতার উপযুক্ত করবে, শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কাজ করবে। কমিশনের বিশেষ বিভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থাকবে।
কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক র্যাকিংয়ে স্থান পেতে উৎসাহিত করবে। কমিশন নিয়মিতভাবে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপযুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে অনুসন্ধান ও পরিদর্শন টিম গঠন করবে। এ টিম একেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কে অনুসন্ধান করবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন কোর্স ও প্রোগ্রাম পূর্ব নির্ধারিত ন্যূনতম শর্তগুলো পূরণ করছে কিনা তা তদারকি করবে। এছাড়া শর্ত পূরণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানের পর্যায়ও নির্ণয় করবে।
কমিশন বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকদের জন্য গ্র্যাজুয়েট রেকর্ড টেস্ট (জিআরটি) নামে একটি কম্পিউটারাইজড পরীক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। যারা ঐচ্ছিক পরীক্ষা দিতে উৎসাহিত হবেন। জিআরটি প্রতিষ্ঠার জন্য কমিশন প্রয়োজনে বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোর সহায়তা নেবে। পূর্ণ গ্র্যাজুয়েশন করার পর ছাত্রদের নিজ নিজ প্রধান বিষয়ে ইন্ডাস্ট্রি দিতে উৎসাহিত করে। নতুন প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ ১৫টি বেশি সংস্কারের প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে।
