Logo
Logo
×

রাজধানী

সেই আ.লীগ নেতার নতুন ফন্দি, যুগান্তর সাংবাদিককে হয়রানির চেষ্টা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩১ পিএম

সেই আ.লীগ নেতার নতুন ফন্দি, যুগান্তর সাংবাদিককে হয়রানির চেষ্টা

সংগৃহীত ছবি

সংবাদ প্রকাশের জেরে ঢাকার নবাবগঞ্জে দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার কাজী সোহেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি, মারামারি ও হুমকির অভিযোগে মামলা করেছে নবাবগঞ্জের আলোচিত আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুরুজ দেওয়ান। 

ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় সুরুজ দেওয়ানের মা সুলতানা পারভীন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় সুলতানা পারভীন দাবি করেন, সাংবাদিক কাজী সোহেল তার কাছ দফায় দফায় চাঁদা দাবি করেছেন। প্রথমে চলতি বছরের ১৫ মে তার নিজ বাড়িতে, এরপর ২০ মে নবাবগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এবং শেষ বার ২ আগস্ট বাদির বাড়িতে গিয়ে সোহেল ১০ লাখ টাকা দাবি করেছেন। 

জানা যায়, গত ২৫ মে যন্ত্রাইল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুরুজ দেওয়ানকে ২৪ গণঅভ্যত্থানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলায় একটি মামলায় ছোট গোবিন্দপুর তার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ। সেই নিউজ দৈনিক যুগান্তরসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই সুরুজের পরিবার সাংবাদিক কাজী সোহেলে উপর বিভিন্ন জুলুর-অত্যাচার চালায়।

এমন কি জেল থেকে বের হয়ে সাংবাদিক কাজী সোহেলকে প্রাণ নাশের হুমকিও দেয় ঐ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুরুজ দেওয়ান। যা দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম সহ যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এঘটনার পর সাংবাদিক সোহেল থানায় অভিযোগ দিলে আত্মগোপনে চলে যায় আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ দেওয়ান।

স্থানীয়রা জানান, সুরুজ অত্যন্ত ধুন্ধর প্রকৃতির লোক। সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার পর তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার বিরুদ্ধে নিউজ করায় এবার নতুন ফন্দি এটেছেন সুরুজ। তিনি কৌশল করে তার মাকে দিয়ে সাংবাদিক সোহেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করছেন।

এদিকে সাংবাদিক সোহেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নবাবগঞ্জ ও দোহারের কর্মরত সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দোহার ও নবাবগঞ্জ প্রেস ক্লাবসহ সামাজিক সংগঠনগুলো। গণঅভ্যত্থানের পরও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার এমন দাপট উদ্বেগ জনক বলে মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে একজন পেশাদার সাংবাদিককে হয়রানি জঘন্যতম অপরাধ। নবাবগঞ্জ প্রেস ক্লাব সহ দেশের সকল সাংবাদিকের দাবি এই মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার করার।

দোহার প্রেস ক্লাবের সভাপতি তারেক রাজিব বলেন, একজন পেশাদার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এরকম মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোদ করব এ মিথ্যা মামলা খারিজ করে দেওয়া জন্য।   

অনুসন্ধানে জানা যায়, সুরুজ দেওয়ান যন্ত্রাইল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। আর সেই প্রভাবে বিগত আওয়ামী লীগের সময়ে বাগিয়ে নেন দলিল লেখকের সনদ। এরপরই আলাউদ্দিনের চেরাগ পেয়ে যান চতুর সুরুজ। এলাকার সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে জমিজমার কাগজপত্র ঠিক করার নামে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। বিশেষ করে নামজারী ও সরকারি সম্পত্তি লিজ ও খ তফসিল জমি কাগজপত্র ঠিক করার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিলেও কাজ না করে উল্টো টাকা চাইলে হুমকির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

দলীয় পদ ব্যবহার করে দুর্নীতির সামাজ্য গড়ে তুলেছিন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুরুজ দেওয়ান। তবে আশ্চর্যের বিষয় ৫ আগস্টের আওয়ামী লীগের সব নেতা কর্মীরা পালিয়ে গেলেও এলাকাই ছিলেন সুরুজ দেওয়ান। এমনকি অদৃশ্য শক্তির বলে এরপরও চালিয়ে যেতে থাকে তার দৌড়াত্ব। তবে বেশি দিন থাকতে পারেনি। গণঅভ্যত্থানে হামলার ঘটনার তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়  আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে জেল থেকে বেড়িয়ে আবারো মানুষকে হয়রানি করছে এ আওয়ামীলীগ নেতা।

এ বিষয়ে সাংবাদিক কাজী সোহেল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ দেওয়ান আমাকে মেরে ফেলার জন্য প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এবং আমার বাড়িতে তার বাবা আক্কাস দেওয়ান, ভাই মানিক দেওয়ান মা সুলতানা পারভিন ও শ্বশুর কাইয়ুম বকসকে নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। উল্টো চালাকি করে তার অবৈধ টাকার জোড়ে তার মাকে বাদি করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানির করার চেষ্টা করছে। দেশের আইনের কাছে আমি এ মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি চাই। 

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির (উপ-পরির্দশক) মো. ইদ্রীস বলেন, মামলাটি তদন্তধীন রয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম