|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নবজাতক জন্মের পর যে কোনো সময়ে জন্ডিসে আক্রান্ত হতে পারে। জন্ডিস হলে শিশুর ত্বক, হাত-পায়ের তালু, চোখের সাদা অংশ হলুদাভ বর্ণ ধারণ করে। এ ক্ষেত্রে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা নির্ণয় করে জন্ডিস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় ।
টার্ম নবজাতকের শতকরা ৬০ ভাগ এবং প্রিটার্ম নবজাতকের শতকরা ৮০ ভাগ জন্মের ২৪ ঘণ্টা পরই জন্ডিসে আক্রান্ত হতে পারে যা ফিজিওলজিক্যাল জন্ডিস নামে পরিচিত। সাধারণত ২ সপ্তাহের মাঝেই এ জন্ডিস কমে যায়। এ ক্ষেত্রে জন্ডিসে আক্রান্ত শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। জন্ডিসের মাত্রা তীব্র হলে বা বিলিরুবিন বেশি বেড়ে গেলে নবজাতককে ফটোথেরাপি দিতে হয় । অনেকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন এ সময় শিশুকে প্রতিদিন আধা ঘণ্টা করে রোদে রাখলে জন্ডিস কমে যাবে যা একটি ভ্রান্ত ধারণা। অতিরিক্ত রোদ শিশুর ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
কোনো কোনো নবজাতক প্যাথোলোজিক্যাল জন্ডিস বা ক্ষতিকর জন্ডিসেও আক্রান্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জন্মের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় নবজাতক জন্ডিসে আক্রান্ত হয় অথবা জন্ডিস ২ সপ্তাহের বেশি থেকে যায়। শিশুর রক্তের গ্রুপ এবং মায়ের রক্তের গ্রুপের মিল না হলে এ জন্ডিস হয়। শিশুর রক্তে সংক্রমণ হলেও এ ক্ষতিকর জন্ডিস হতে পারে। মাঝে মাঝে শরীরের কোনো বিশেষ এনজাইমের অভাবজনিত কারণেও জন্ডিস হতে পারে।
অনেক ক্ষেত্রে জন্ডিসের সময় নবজাতকের প্রস্রাব হলুদ এবং মল দুধের মতো সাদা হয়ে যায়, যা ‘বিলিয়ারী এট্রেসিয়া’ নামক রোগের লক্ষণ । এ রোগে আক্রান্ত শিশুর পিত্তনালি শুকিয়ে যায়। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে অপারেশন করলে এ রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়। সুতরাং, আপনার নবজাতকের জন্ডিস দীর্ঘ মেয়াদী হলে বা জন্ডিসের মাত্রা বেশি হলে দেরি না করে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, শিশু পরিপাকতন্ত্র, পুষ্টি ও লিভার রোগ বিভাগ, বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটি।
