কাঞ্চননগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:০৮ পিএম
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দংয়ে কাঞ্চননগর ডলু রাবারবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাড়িয়ে আছে।
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দংয়ে কাঞ্চননগর ডলু রাবারবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। ভবনের ছাদে ফাটল, খসে পড়ছে পলেস্তারা, বেরিয়ে এসেছে রড ও ইট। পিলারেও দেখা দিয়েছে ফাটল। তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকদের অফিসকক্ষ পুরোপুরি জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে।
শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে বিদ্যালয়টি প্রতিদিন পাঠদান চালালেও ঝুঁকির কারণে শ্রেণি কার্যক্রম চলছে পাশের নড়বড়ে সেমিপাকা তিনটি কক্ষে। তবে সেগুলোও এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এ কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালে এটি রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২০১৩ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। তাদের পাঠদানে নিয়োজিত আছেন ৪ জন শিক্ষক। তারমধ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য আছে ১০বছর ধরে।
১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়ের উত্তারাংশে চার কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন ব্যবহার হওয়ায় ২০২০ সালের দিকে ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। পরে ২০২৩ সালে দক্ষিণাংশে একটি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে পাঠদান চালানো হলেও সেটিও এখন ভগ্নদশায়।
এ বিদ্যালয়ের জমির পরিমাণ ৩৩ শতাংশ। তবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নেই কোনো সীমানা প্রাচীর। আসবাবপত্রেরও রয়েছে চরম ঘাটতি। ফলে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও জোড়াতালি দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া রুমানা আক্তার জানায়, ক্লাস করার সময় ছাদ থেকে পানি পড়ে। মাঝে মাঝে পলেস্তারা খসে পড়ে। ফলে ভয়ে ভয়ে ক্লাস করতে হয়
৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলা উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির সময় ভেতরে পানি ঢুকে যায়। জায়গা কম থাকায় আমরা ঠিকমতো বসতেও পারি না।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি রসুল আমিন বলেন, আমাদের সন্তানরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। এই ঝুঁকির কারণে অনেক শিক্ষার্থী প্রতি বছর ঝরে যাচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জুবেদা খানম বলেন, ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে প্রতিদিন আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস নিতে হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য এটি নিরাপদ নয়। কক্ষ সংকটে একটি কক্ষেই শ্রেণি ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। একটি ভবন পেলে এই দুঃখ লাঘব হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাছান মুরাদ চৌধুরী বলেন, ডলু রাবারবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলছে। বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। নতুন ভবনের জন্য দ্রুত বরাদ্দ আনার চেষ্টা করব।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। ভবনগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রতই এ সমস্যার সমাধান হবে আশা করি।
