ইউএনওর স্বাক্ষর জালিয়াতি করেও বহাল তবিয়তে সেই পরিদর্শক
নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৫২ পিএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে ট্রেড লাইসেন্স বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর দৈনিক যুগান্তরে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার দুই সপ্তাহ পার হলেও এখন পর্যন্ত সেই নাচোল পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে কোনো রকমের তদন্ত কমিটি গঠন বা শোকজ করেনি কর্তৃপক্ষ। সংবাদ প্রকাশের পরও কিভাবে বহাল তবিয়তে আছেন- তা নিয়ে নাচোল পৌরবাসী সংশয় প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর দৈনিক যুগান্তরে ‘নাচোল ইউএনও কামাল হোসেনের স্বাক্ষর জাল করে ট্রেড লাইসেন্স বাণিজ্যের অভিযোগ লাইসেন্স পরিদর্শক আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে নাচোল পৌরবাসীর মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স ফেরতে তোড়জোড় শুরু হয়। অনেক লাইসেন্স গ্রহীতা ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করা লাইসেন্স কপি নাচোল পৌরসভায় ফেরত দিয়েছেন।
নাচোল পৌরসভার রেলস্টেশন এলাকার নাগরিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা-বণিজ্যের একটি ট্রেড লাইসেন্স পৌরসভা থেকে নিই। পরে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর আমরা জানতে পারি যে ট্রেড লাইসেন্সে ইউএনওর স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়েছে। তখন আমি আমার ট্রেড লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে পারি ব্যাংকে টাকা জমা হয়নি, সেই টাকা আহসান হাবীব নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আমি সেই ট্রেড লাইসেন্স নতুনভাবে করার জন্য পৌরসভায় জমা দিয়েছি।’
নাম না প্রকাশের শর্তে নাচোল পৌরসভার একজন কর্মচারী জানান, ‘সংবাদ প্রকাশের পর ইউএনও স্যার পৌরসভায় এসে একদিন আহসান হাবীবকে ধমক দেন। পরে আর কোনো ব্যবস্থা নেননি। তিনি দায়িত্বে বহাল থেকে আগের মতোই কার্যক্রম করছেন।’
এ বিষয়ে নাচোল ইউএনও কামাল হোসেন বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, সেটি দেখেছি। কেউ অভিযোগ না দিলে কিভাবে ব্যবস্থা নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি ডিসি স্যারকে জানানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১০ আগস্ট পৌরসভার পিপড়া ডাঙ্গার নাগরিক ইকবাল শফিককে (মাহির ফার্মেসি) একটি ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করেন লাইসেন্স পরিদর্শক আহসান হাবীব। সেই ট্রেড লাইসেন্সের কপিতে পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক আহসান হাবীবের, পৌর সচিব খায়রুল হক এবং প্রশাসক হিসাবে ইউএনওর স্বাক্ষর রয়েছে। একই তারিখে ইস্যু করা মিলন অটো রাইস মিলের ট্রেড লাইসেন্সও একই স্বাক্ষর রয়েছে। কিন্তু ট্রেড লাইসেন্সের কপিতে পৌর প্রশাসক হিসেবে ইউএনও কামাল হোসেনের যে স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি প্রকৃতপক্ষে ইউএনওর স্বাক্ষর নয় বলে জানা যায়।
অভিযোগ রয়েছে, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুর রশিদ খানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন আহসান হাবীব। আওয়ামী লীগের আমলে তিনি সরকারি খাতে ট্রেড লাইসেন্সের টাকা জমা না দিয়ে নিজের পকেট ভরতেন। জাল স্বাক্ষর করে নাগরিকদের কাছে থেকে ট্রেড লাইসেন্স ফিও নেন অতিরিক্ত।

