তিন মাসে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মাত্র সাত দিন উপস্থিত!
সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নাটোরের সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া পি.জি.ডি উচ্চ বিদ্যালয়ে গত তিন মাসে প্রধান শিক্ষক হাজির হয়েছেন মাত্র সাত দিন। তার অনুপস্থিতিতে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রমে চরম অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে। নিয়মিত সমাবেশ হয় না, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও খুবই কম। শিক্ষকরা মনমতো আসা-যাওয়া করেন।
বিদ্যালয়ের চারতলা আধুনিক ভবন বাইর থেকে আকর্ষণীয় হলেও ভেতরে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। ক্লাসরুমে ধুলা-ময়লার স্তূপ, টেবিল-চেয়ারে আস্তরণ, অপরিচ্ছন্ন টয়লেট থেকে আসা দুর্গন্ধ এবং তালাবদ্ধ ল্যাবরেটরি ও কম্পিউটার কক্ষ যেন অনিয়ম ও অবহেলার প্রমাণ দিচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়— দশম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন বাংলার শিক্ষক শরিফুল ইসলাম। ২৭ জনের মধ্যে উপস্থিত মাত্র ৬ জন। পাশের কক্ষে নবম শ্রেণির পাঠদান করছেন শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক বাণী ইসলাম। সেখানে ৩৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত মাত্র ১৩ জন। চতুর্থ তলার বিশাল হলরুমে দামি টেবিল-চেয়ার ধুলায় নষ্ট হচ্ছে।
৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহমদুল্লাহ ওরফে সুমন বলেন, প্রধান শিক্ষক ছাড়া কোন বিদ্যালয় ভালো চলতে পারে না। এক সপ্তাহ ও পনের দিন পরপর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন। এই কারণে পাঠদানও ভালো হয় না, শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়ে কম আসেন।
এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক অসুস্থতার কারণে নিয়মিত আসেন না। আর কাউকে তিনি দায়িত্বও দেননি। তাছাড়া বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্ন কর্মী, আয়া, নিরাপত্তা কর্মী, অফিস সহায়ক না থাকায় এই দুরাবস্থা। তারপরও তিনি নিজে নিজে যতটুকু পারেন চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদ আলী মুঠোফোনে বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত। হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনা ও অসুস্থতার কারণে তিনি কিছুটা অনিয়মিত। আওয়ামীলীগের কতিপয় দোসর সুন্দর প্রতিষ্ঠানকে নষ্ট করছে। যারা তার কথা শোনেন না। জাল কাগজপত্র তৈরি ও জোর করে সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েছেন বজলুর রহমান। এখন তার অনুপস্থিতিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পালন না করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা রটাচ্ছেন। তাছাড়া তার প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষক শফিকুল ইসলামের নিবন্ধন সনদপত্রটিও জাল। এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানে মাঝে মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়ে পাঠদানের বিঘ্ন ঘটে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) বলেন, এসকল বিষয় তার জানা নেই। জেনে সকল বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
