পদ্মার কালিদাসখালী ঘাটে নিত্য বসে মাছের হাট
আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী)
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মা নদীবেষ্টিত কালিদাসখালী ঘাট। এ ঘাটে প্রতিদিন মাছের হাট বসে। জেলেরা প্রতিদিন পদ্মা নদী থেকে মাছ ধরে এই হাটে বিক্রি করেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ কিনতে এখানে আসেন ব্যাপারীরা।
জানা গেছে, মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন নদীবেষ্টিত উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ১৫টি চর রয়েছে। এই চরে জনসংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। উপজেলায় ২৬ কিলোমিটার এলাকা পদ্মা নদী রয়েছে।
এর মধ্যে ১৫ কিলোমিটার চকরাজাপুর ইউনিয়নের মধ্যে ৩৭০ জন জেলে রয়েছে। তারা ভাঙনকবলিত সহায় সম্বলহীন মানুষ। তবে কোনো কোনো চরে স্থায়ী জনবসতি গড়ে উঠেছে। আবার কোনো চরে অস্থায়ী বসতি রয়েছে।
জেলেরা সারা রাত মাছ শিকার করে সকালে কালিদাসখালী পদ্মা নদীর ঘাটে বিক্রি করতে আসে। এখানে মাছ কিনতে আসেন ঈশ্বরদী, লালপুর ও কুষ্টিয়ার ব্যাপারীরা।
কালিদাসখালী চরের জেলে ওয়ালিউর রহমান বলেন, আমি প্রতিদিন পদ্মা নদীতে মাছ ধরি। সকালে কালিদাসখালী পদ্মা নদীর ঘাটে বিক্রি করি। বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারী এসে মাছ কিনে নিয়ে যায়। মাছ ধরা আমার মূল পেশা। এই আয় দিয়ে আমার ৬ সদস্যের সংসার চলে।
ঈশ্বরদী থেকে মাছ কিনতে আসা ব্যাপারী আমিরুল ইসলাম বলেন, জেলেরা সারা রাত মাছ ধরে প্রতিদিন সকালে এই ঘাটে বিক্রি করতে আসেন। এখান থেকে মাছ কিনে ঈশ্বরদীতে নিয়ে যাই। পদ্মা নদীর মাছের প্রচুর চাহিদা। সকাল ৭টা থেকে হাট শুরু হয়ে ২ ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়।
মাছ বিক্রি করতে আসা চৌমাদিয়া চরের জেলে জয়নুল হোসেন বলেন, আমি ও আমার ছেলে মিলে মঙ্গলবার ৫ কেজি চিংড়ি, বালি মাছ ধরেছিলাম। এই মাছ কালিদাসখালী পদ্মা নদীর ঘাটে বিক্রি করি।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিজুল আযম বলেন, পদ্মার চরের মধ্যে ১৫টি চর নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়েছে। পদ্মায় নতুন পানি বাড়ছে। তারপর থেকে কেউ নৌকা, কেউ জাল দিয়ে মাছ ধরে। এ দিয়েই তাদের জীবিকা চলে।
পদ্মার চরের বেশির ভাগ বাসিন্দা ভূমিহীন অসহায় খেটেখাওয়া মানুষ। তারা প্রতিনিয়ত প্রকৃতির খামখেয়ালি রূপকে বরণ করে বসবাস করে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ শুকনো মৌসুমে কৃষিকাজ আর বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে।
