Logo
Logo
×

সারাদেশ

বিত্তবানদের সাহায্য নিয়ে আবারও স্কুলে যেতে চায় আবিদ

Icon

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০১ পিএম

বিত্তবানদের সাহায্য নিয়ে আবারও স্কুলে যেতে চায় আবিদ

ছবি: যুগান্তর

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার গারাংগিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মো. আবিদ হাসান। সদা হাস্যোজ্জ্বল, চঞ্চল এই কিশোরের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও দারুণ আগ্রহ ছিল; কিন্তু হঠাৎ করেই সব পালটে গেছে। সুস্থ সবল প্রাণবন্ত আবিদের শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধি ক্যানসার।

উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নুরুল ইসলামপাড়ার বাসিন্দা নুরুল কবির ও রিনা আক্তারের ছেলে আবিদ হাসান। তিন ভাই বোনের মধ্যে আবিদ সবার বড়।

আবিদের বাবা নুরুল কবির জানান, দুই মাস আগে হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হয় আবিদ। এরপর তাকে লোহাগাড়া ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। তবুও কিছুতেই আবিদ সুস্থ হচ্ছিল না। শেষমেশ চিকিৎসক পরামর্শ দেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার। পরামর্শ অনুযায়ী মেডিকেলে নিয়ে ডাক্তার দেখাই। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ব্লাড ক্যানসার শনাক্ত হয়।

আবিদের বাবা নুরুল কবির কক্সবাজারে কাপড়ের দোকানে স্বল্প বেতনে চাকরি করেন। পরিবারের জন্য নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা তার। মা রিনা আক্তার গৃহিণী। সীমিত আয়ের সংসারের ঘানি টানতে যেখানে হিমশিম খেতে হয় সেখানে ছেলের এ ব্যয়বহুল চিকিৎসার বোঝা বহন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজের সম্বল বলতে কিছু নেই, যা ছিল প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সব শেষ হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেড়ে শোয়া দুরন্তপনা শিশু আবিদ এখনো জানেনা তার শরীরে ভয়ানক এক রোগের বসবাস।

অসুস্থ আবিদ বাবাকে বারবার জিজ্ঞেস করছে, আমি কবে থেকে স্কুলে যাব বাবা? অসহায় বাবা সন্তানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মাথা নেড়ে জানায় এই তো আর কয়েকটা দিন বাবা। তারপর আড়ালে গিয়ে মুছতে থাকেন চোখের কোণে জমে থাকা অশ্রুবিন্দু।

গারাংগিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেজাম উদ্দীন বলেন, আবিদ পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলায় ও তার সহপাঠীদের মাতিয়ে রাখত। অল্প বয়সে তার শরীরে এমন কঠিন রোগ বাসা বেঁধেছে খবরটা খুব খারাপ লাগল। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করব, আমি চাই আবিদ আবারও সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। তার সহপাঠীদের সঙ্গে আবারও খেলাধুলায় মেতে উঠুক। 

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে, আবিদকে সুস্থ করে তুলতে আনুমানিক দশ থেকে ১৫ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। অথচ চিকিৎসা ব্যয় জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে পরিবারটি।

আবিদের পরিবার আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল না। এরই মধ্যে গত তিন মাসে চিকিৎসায় জন্য আত্মীয়-স্বজনদের দেওয়া সহযোগিতায় প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়ে গেছে। এখন আর কোনোভাবেই টাকা জোগাড়ের সাধ্য নেই। চিকিৎসক জানিয়েছেন পুরো চিকিৎসায় অন্তত বারো থেকে পনেরো লাখ টাকার মতো খরচ হবে। এখন সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা না পেলে অকালেই ঝরে যাবে আবিদের জীবন। 

আবিদ এখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে একটাই কথা বলছে— আমি আবার স্কুলে ফিরতে চাই। আমি বাঁচতে চাই।

এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সরকারিভাবে অনুদানের ব্যবস্থা রয়েছে। ওই শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করব।

একটি শিশুর হাসি যেন অর্থের অভাবে থেমে না যায়—সেজন্য দেশে ও প্রবাসী বাংলাদেশি, সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন তার বাবা-মা।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা:

বিকাশ: 01874425975 (Psrsonal)

নগদ: 01322215965 (Personal)

A/C no: —1391120041892

ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, চকবাজার ব্রাঞ্চ, চট্টগ্রাম।

বাড়ি: মাস্টার পাড়া, গারাংগিয়া, সাতকানিয়া-৪৩৮৬, চট্টগ্রাম।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম