Logo
Logo
×

সারাদেশ

প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো চট্টগ্রামের দুর্গোৎসব

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম

প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো চট্টগ্রামের দুর্গোৎসব

ছবি: যুগান্তর

শঙ্খনাদ উলুধ্বনি, ঢাকের বাদ্যি ও সিঁদুর খেলার মাঙ্গলিক আচারে দেবী দুর্গাকে ভালোবাসার চোখের জলে বিদায় দিলেন ভক্তরা। বছর ঘুরে অন্নপূর্ণার আগমনে দেশের মন্দির-মণ্ডপে উৎসব আর আনন্দের যে রেশ ছড়িয়ে ছিল গত কয়েক দিন। 

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দশমী তিথিতে দেবীকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়ে সাঙ্গ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার। আগামী বছরের অপেক্ষায় থেকে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে দেবালয়ে বিদায় জানালেন ভুবনের বাসিন্দারা।

শারদীয় দুর্গোৎসবে বিজয়া দশমীর দিনটি ভক্তদের কাছে একদিকে যেমন উৎসবের, তেমনি বেদনারও। হাতির পিঠে (গজে) চেপে দুর্গা এসেছিলেন মর্ত্যলোকে, আর দোলায় চেপে দেবী ফিরে গেলেন কৈলাসে। 

হিন্দুধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে কৈলাস ছেড়ে কন্যারূপে মর্ত্যলোকে আসেন দেবীদুর্গা। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব।

বৃহস্পতিবার প্রতিমা বিসর্জনের আগে সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয় দশমীর পূজা অর্চনা। সকাল ৬টা ৩০ মিনিটের মধ্যে শুরু হয় দশমী বিহীতপূজা। পূজা শেষে ভক্তরা ভক্তি শ্রদ্ধার্ঘ দিয়ে দুর্গামায়ের চরণে শেষবারের মতো প্রণাম জানিয়ে আশীর্বাদ গ্রহণসহ শান্তির জল গ্রহণ করেন। পূজা শেষে দেওয়া হয় দর্পণ বিসর্জন। এ সময় পরম ভক্তি নিয়ে নিজ নিজ মনের বাসনা জানিয়ে দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ান নারীরা। লাল রঙকে শক্তির প্রতীক হিসেবে মনে করে নারীরা একে অপরের মাথায় সিঁদুর ছোঁয়ান। দীর্ঘায়ু কামনা করেন পরিবারের সদস্যদের। সধবা নারীরা বিসর্জনের জন্য দেবীকে সাজান ফুল, সিঁদুর ও নানা অলংকার দিয়ে। পুরোহিতরা দেবীর জন্য সাজান সিদ্ধ চালের নৈবেদ্য, কচু–ঘেচু আর শাপলা দিয়ে। এরপর শেষমন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে বিদায় জানানো হয় দেবীকে। মণ্ডপে মণ্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ একে অপরের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর নগরীর প্রতিটি পূজামণ্ডপ থেকে ট্রাকের সারিতে করে ধুনচি নাচ, ঢাকের বাদ্যে নেচে-গেয়ে প্রতিমা বিসর্জন দিতে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। 

সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা নিরঞ্জন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ সময় চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ পূজা পরিষদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রতি বছরের মতো এবারও দেবীকে শেষবারের মতো দর্শনে লোকে-লোকারণ্য হয় পতেঙ্গা সৈকত। 

এদিকে সন্ধ্যার মধ্যে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে সিটি করপোরেশন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে আলোকবাতি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সাজসজ্জা, মঞ্চ নির্মাণ, মাইকিং, পানীয় জলসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ আনসার সদস্যের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় র্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যদেরও।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম