ছেলেকে নদীতে ফেলে হত্যা, মায়ের বিচার দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বরগুনার তালতলীতে তিন বছরের এক শিশু ছেলেকে নদীতে ফেলে হত্যার অভিযোগে তার মায়ের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বড় অংকুজানপাড়া আশ্রয় প্রকল্পে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, চার বছর আগে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বড় অংকুজানপাড়া এলাকার শানু হাওলাদারের ছেলে শাহিনের সঙ্গে ছোটবগী ইউনিয়নের পিকে এলাকার মনির খন্দকারের মেয়ে মার্জিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে জন্ম নেয় একমাত্র পুত্রসন্তান শাহাদাত হোসেন। এরপর স্ত্রী মার্জিয়া আক্তার পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ায় সংসারে প্রায়ই কলহ লেগে থাকত এমন অভিযোগ স্বামী শাহিনের।
গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে মার্জিয়া আক্তার তার শিশু ছেলে শাহাদাতকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পর দিন মঙ্গলবার সকালে একই এলাকায় অবস্থিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসংলগ্ন পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে ভেসে ওঠে শিশু শাহাদাতের মরদেহ। এরপর মায়ের বিরুদ্ধে শিশু ছেলেকে নদীতে ফেলে হত্যার অভিযোগ এনে শিশুটির বাবা শাহিন থানায় মামলা করতে যান কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। এতে পুলিশের উদাসীনতা নিয়ে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, সেই সঙ্গে শিশু ছেলেকে নদীতে ফেলে হত্যার অভিযোগে তার মায়ের বিচার দাবি করেছেন তারা।
এদিকে মার্জিয়া আক্তার নিখোঁজ থাকায় তার বাবা মনির খন্দকার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
শিশুটির বাবা শাহিন বলেন, সোমবার রাতে মার্জিয়া সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন নদীতে ভেসে ওঠা লাশ দেখে বুঝতে পারি এটা আমার ছেলে শাহাদাত।
তিনি আরও বলেন, মার্জিয়া দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে ঘর থেকে বের হয়ে যেত। এবার ঘর থেকে বেরিয়ে সন্তানকে হত্যা করে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েছে। আমি থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
তালতলী থানার উপ-পরিদর্শক মোস্তফা কামাল বলেন, মার্জিয়ার বাবা এলাকায় থাকেন না। তবুও মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় তিনি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিখোঁজ মার্জিয়ার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, শিশুর মরদেহ পায়রা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। পাশাপাশি শিশুটির মা নিখোঁজ থাকার বিষয়টি নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। শিশুটির মায়ের সন্ধান পেলেই আসল রহস্য বের হবে।
