Logo
Logo
×

সারাদেশ

যমুনা নদীতে বর্ণিল সাজে শত শত নৌকার বহর

Icon

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:২৯ পিএম

যমুনা নদীতে বর্ণিল সাজে শত শত নৌকার বহর

নদীতে শত শত নৌকা। একেকটি একেক রকমের সাজানো। ঢাক-ঢোল আর সাউন্ড বক্স ও মাইকের সাউন্ডে সনাতন ধর্মাবলম্বী ছেলে-মেয়েসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নাচানাচিতে চারদিক মুখরিত। সেই দৃশ্য উপভোগ করতে নদীর দুই পাড়ে ভিড় করেন হাজারও মানুষ। এমনই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ফুটে উঠেছে ছোট যমুনা নদীতে। 

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে মঙ্গলবার উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কুজাইল বাজারে বসে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা।

স্থানীয়রা তাদের শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতিমা বিসর্জনের দিন থেকে লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে কুজাইল বাজারে দুই দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলার আয়োজন করেন। মেলায় বসে হরেক রকমের দোকানপাট। মেলার প্রথম দিন মঙ্গলবার মূল আর্কষণ ছিল নৌবহর আর দ্বিতীয় দিন বুধবার হয় বউমেলা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাশিমপুর রাজবাড়ির রাজবাহাদুর শ্রী. অন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ীর রাজত্ব পরিচালনার আগে থেকে লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রায় দুইশ বছর থেকে লক্ষ্মী প্রতিমা বিসর্জনের দিন থেকে এ মেলা শুরু হয়। 

ঐতিহ্যবাহী এ মেলার বিশেষ আর্কষণ প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে ছোট যমুনা নদীতে নৌবহর অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দুপুরের পর থেকে রাণীনগর, আত্রাই, মান্দা, নওগাঁ সদরসহ কয়েকটি উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নৌকায় চড়ে আসতে থাকেন। পাশাপাশি মেলা ও নৌবহর উপভোগ করার জন্য নৌকায় ঘুরে বেড়ান অন্য ধর্মের মানুষও। 

সাউন্ড বক্স, মাইক আর ঢাকের তালে তালে নৌকায় বিনোদনপ্রেমীদের নৃত্যে মুখরিত হয়ে উঠে ছোট যমুনা নদী। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মিলনমেলায় পরিণত হয় নদীর দুই পার। মঙ্গলবার ৪ শতাধিক নৌকা নদীতে নৌবহরে মেতে উঠে, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এরপর নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

কুজাইল হিন্দুপাড়া গ্রামের বিকাশ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, পূর্ব পুরুষেরা এ মেলা শুরু করে গিয়েছেন। আমরা শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যাচ্ছি। দুর্গাপূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হলেও আমাদের এখানে লক্ষ্মীপূজার আনন্দটা বেশি হয়।

মেলা কমিটির সদস্য সচিব শামসুর রহমান বলেন, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় আমরা হিন্দু মুসলিম একে অপরকে সহযোগিতা করি। এ মেলায় অনেক দূরদূরান্ত থেকে নৌকা নিয়ে এসে নৌবহরে যুক্ত হয়; যা হাজার হাজার নারী পুরুষ উপভোগ করেন। এবারের মেলায় প্রায় দুইশ দোকান বসেছে।

কুজাইল বাজার জাগরণ সংসদ ক্লাবের সভাপতি শাহিদুর রহমান বলেন, শত শত বছর আগে থেকে লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে এখানে মেলা হয়ে থাকে। মেলার মূল আকর্ষণ নৌবহর; যা নদীর দুই পারের হাজার হাজার মানুষ উপভোগ করে। মেলায় জামাইদের বড় বড় মাছ, মিষ্টিসহ হরেক রকমের খাবার কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়। মেলার দ্বিতীয় দিন বউমেলা অনুষ্ঠিত হয়। আমরা হিন্দু মুসলিম উভয়ে মিলেমিশে এই আনন্দ উপভোগ করি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে; যা বলা যায় এক প্রকার সেতুবন্ধন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম