মসজিদের পুকুরের মাছ লুট করলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আঁওড়া গুচ্ছগ্রামে মসজিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে চাষকৃত মাছ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
বুধবার সকালে উপজেলার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় ২০-২৫ জন লোক মসজিদ কমিটির পুকুর থেকে অন্তত ১০ মণ মাছ তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, আঁওড়া গুচ্ছগ্রামের ‘চ্যানরাল’ নামের ওই পুকুর তিন মাস আগে মসজিদ উন্নয়ন তহবিলের জন্য মাছ চাষ শুরু হয়। পুকুরটিতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার রুই, মৃগেল, কাতলা ও সিলভার কার্প প্রজাতির মাছের পোনা ছাড়েন গুচ্ছগ্রামবাসী। নিয়মিত খাবার ও পরিচর্যার মধ্য দিয়ে মাছগুলো বড় হচ্ছিল। কিন্তু বুধবার ভোরে জাকারিয়া হোসেনের নেতৃত্বে একদল লোক পুকুরে জেলে নামিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়।
মসজিদের ইমাম ছানোয়ার হোসেন বলেন, ফজরের নামাজ শেষে বাড়ি ফিরেই দেখি- খোরশেদ, জাকারিয়া, রিপন, মোজা, ইকবালসহ অনেকে আমাদের পুকুরে মাছ ধরছে। আমরা বাধা দিলেও তারা জোরপূর্বক মাছ তুলে নিয়ে যায়। অন্তত ৪০ হাজার টাকার মাছ লুট হয়েছে।
স্থানীয় নারী শিরিনা আক্তার বলেন, আমার স্বামী সাইদুর রহমানসহ গুচ্ছগ্রামের মুসল্লিরা মসজিদের উন্নয়নের জন্য এ পুকুরে মাছ চাষ করেছিল; কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কিছু লোক দখল নিতে চায়। আজ তারা জেলে নামিয়ে সব মাছ ধরে নিয়ে গেছে।
একই অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী সালমা বেগম, আমিছা বিবি, তাইরুল ইসলাম, ববি বেগমসহ অনেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘চ্যানরাল পুকুরটি’ মূলত একটি সরকারি (ভিপি) পুকুর। ২০২৪ সালে কালাই উপজেলা যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি সানোয়ার হোসেন ছানা এটি ইজারা নিয়েছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর তিনি পুকুরটি আঁওড়া গুচ্ছগ্রাম জামে মসজিদ কমিটিকে দান করেন। এরপর থেকেই মসজিদ কমিটি পুকুরটির রক্ষণাবেক্ষণ ও মাছ চাষ করে আসছিল।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, পুকুরটির ডিসিআরসহ সব বৈধ কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে। এটি মসজিদের পবিত্র সম্পদ। গ্রামের মানুষ মিলে আমরা চাষ করছিলাম। অথচ বুধবার সকালে জাকারিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক ১০-১৫ মণ মাছ জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গেছে। আমরা এর ন্যায়বিচার চাই।
অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাকারিয়া হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমরা জেনেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
