মোংলায় জনসমাবেশ
খাদ্য, পানি এবং জমিতে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: শামীম
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিএনপির কেন্দ্রীয় গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেছেন, কৃষি, খাদ্য ও মৎস্য উৎপাদনে কোনো করপোরেট দখল এবং নব্য ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ সহ্য করা হবে না। সবার আগে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। খাদ্য, পানি এবং জমিতে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, উপকূলের পরিবেশ বির্পযয় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলেছে। জলবায়ু উদ্বাস্তু রোধে উত্তরের দেশগুলোকে ঋণ নয়, ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দেশে ন্যায্য জলবায়ুবান্ধব টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
বুধবার বিকালে মোংলার কাইনমারিতে চাঁদপাই ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
উপকূলীয় নারী, বনজীবী, মৎস্যজীবী, ভূমিহীন, জলবায়ু উদ্বাস্তুসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে খাদ্য, পানি এবং জমিতে নারীর অধিকার রক্ষার দাবিতে এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বাদাবন সংঘ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার এ জনসমাবেশের আয়োজন করে।
জনসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার পরিবেশযোদ্ধা মো. নূর আলম শেখ।
জনসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন- উপজেলা কৃষি অফিসার প্রশান্ত কুমার হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু হানিফ, সুন্দরবন জাদুঘরের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাষ, বিএনপি নেতা এমরান হোসেন, বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী মো. শাহ্ আলম শেখ ও নারীনেত্রী শামীমা আক্তার লাইজু।
এতে বক্তব্য রাখেন- উন্নয়নকর্মী তৃপ্তি সরদার, সুনীতি রায়, সাংস্কৃতিক সংগঠক জানে আলম বাবু, গীতিকার মোল্লা আল মামুন, জেলে সমিতির নেতা বিদ্যুৎ মন্ডল, আব্দুর রশিদ হাওলাদার, পরিবেশকর্মী কমলা সরকার, হাছিব সরদার, মেহেদী হাসান প্রমুখ।
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে উপকূলের ৬৪% মানুষ নিরাপদ খাবার পানি থেকে বঞ্চিত। লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদন ও মৎস্য চাষে বিপর্যয় নেমে এসেছে। প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষায় জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তর ঘটাতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় উপজেলা কৃষি অফিসার প্রশান্ত কুমার হাওলাদার বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার কৃষিতে ভর্তুকি দিচ্ছে। কৃষি গবেষণা ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। জলবায়ু সহনশীল কৃষি চাষাবাদে উপকূলের প্রান্তিক চাষিদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
নারীনেত্রী কমলা সরকার বলেন, কৃষিকাজ ও মৎস্য চাষে নারীদের অবদান থাকলেও স্বীকৃতি নেই। নারী কৃষক ও নারী জেলেদের সরকারিভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। জলবায়ুর অভিঘাতে আক্রান্ত নারীর অধিকার রক্ষায় সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে পশুর রিভার ওয়াটারকিপার পরিবেশযোদ্ধা মো. নূর আলম শেখ বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করে জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে হবে। নারীর অধিকার মানবাধিকার বিবেচনায় নিতে হবে। জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনে তাদের মাঝে খাসজমি বণ্টন করতে হবে।
জনসমাবেশে কৃষাণীরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য প্রদর্শন করেন। জনসমাবেশে লাঠি খেলাসহ গ্রামীণ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
এ বছর বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনকে কেন্দ্র করে তাদের শোষণ, সম্পদের অবক্ষয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নব্য ঔপনিবেশিক আচরণের প্রতিবাদে এ জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়।
