Logo
Logo
×

সারাদেশ

গৃহবধূকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখার মামলা, ছেলেকে অব্যাহতি

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১২ পিএম

গৃহবধূকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখার মামলা, ছেলেকে অব্যাহতি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুনকে হত্যা করে মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখার মামলায় চার্জশিট দাখিল হয়েছে। বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল হক শুনানি শেষে তিন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন।

এছাড়া নিহতের ছেলে সাদ বিন আজিজকে (২০) মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার এ তথ্য দিয়েছেন।

পুলিশ ও এজাহার সূত্র জানান, গত বছরের ১০ নভেম্বর সকালে দুর্বৃত্তরা দুপচাঁচিয়া উপজেলায় বগুড়া-নওগাঁ সড়কের পাশে জয়পুরপাড়ার ডিএস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ এসএম আজিজুর রহমানের বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা তার স্ত্রী উম্মে সালমা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশটি ডিপ ফ্রিজে রেখে পালিয়ে যায়। দুপুরে তার ছোট ছেলে একই মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির ছাত্র সাদ বিন আজিজ বাড়ি ফিরে মূল ফটকে বাহিরে থেকে তালা দেখতে পান।

তিনি কাছে থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে ভেতরে ঢুকে মাকে দেখতে পাননি। ঘরে ঢুকে দেখেন- জিনিসপত্র এলোমেলো ও আলমারিতে কুড়ালের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এরপর সাদ ফোনে বাবা এসএম আজিজুর রহমানকে অবহিত করেন।

খবর পেয়ে আজিজুর রহমান বাড়িতে এসে স্ত্রীকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে ডিপ ফ্রিজের ঢাকনা উঁচু দেখতে পাওয়া যায়। ফ্রিজের ঢাকনা খুলে ভিতরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার স্ত্রী উম্মে সালমার মরদেহ দেখতে পান। পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত শুরু করে। নিহতের বড় ছেলে নাজমুস সাকিব দুপচাঁচিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।

এদিকে ঘটনার পরদিন ১১ নভেম্বর র‌্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানির সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজকে গ্রেফতার করে। রিমান্ডে সাদ মাকে হত্যার দায় মাথায় নিয়ে স্বীকারোক্তি দেন। এ নিয়ে মানুষের মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা দেখা দেয়। পরবর্তীতে একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নতুন মোড় নেয়।

জানা যায়, বাড়ির নারী ভাড়াটিয়াকে অনৈতিক কাজে বাধা ও তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে গৃহবধূ উম্মে সালমাকে হত্যা করা হয়েছে। নারী ভাড়াটিয়া উপজেলার উত্তর সাজাপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী মাবিয়া সুলতানা হাসি (৫০) ও অপর দুজন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। বগুড়ার ডিবি পুলিশ ও দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ গত বছরের ১৪ নভেম্বর ভোরে মাবিয়া সুলতানা হাসি, তালুচ পশ্চিমপাড়ার আবদুর রহিমের ছেলে মোসলেম উদ্দিন (২৮) ও তালুচ বাজার এলাকার নারায়ণ রবিদাসের ছেলে সুমন চন্দ্র রবিদাসকে (৩২) গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আদালতে এই তিন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুপচাঁচিয়া থানার এসআই সুব্রত কুমার তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডে নিহতের ছেলে সাদ বিন আজিজের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। এছাড়া অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ উম্মে সালমা হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিলের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার আদালত শুনানি শেষে ছেলে সাদকে অব্যাহতি ও তিন আসামি মাবিয়া সুলতানা হাসি, মোসলেম উদ্দিন ও সুমন চন্দ্র রবিদাসের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম