Logo
Logo
×

সারাদেশ

ইয়াবা-ককটেল দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ফাঁসলেন তিন বন্ধু

Icon

গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫০ পিএম

ইয়াবা-ককটেল দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ফাঁসলেন তিন বন্ধু

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে ইয়াবা ও ককটেল বোমা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন তিন বন্ধু। পুলিশের তদন্তে ধরা পড়ে শপিংব্যাগে ককটেল বোমা ও পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর গল্প।

শেষে পরিকল্পনাকারী তিনজনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও বিস্ফোরক দ্রব্য মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

আসামিরা হলেন- উপজেলা নলমুড়ি ইউনিয়নের ঘাটাখান গ্রামের খোকন সরদারে ছেলে আল আমিন (২৬), খোদেজঙ্গল গ্রামের আক্তার উকিলের ছেলে রুবেল (২০), একই গ্রামের মোস্তফা সরদারের ছেলে সোহাগ সরদার (১৯)।

ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলায়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

গোসাইরহাট থানার এসআই ননি গোপাল জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আল আমিন নামে এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে জানান, গোসাইরহাট বাজারে পট্টি ব্রিজে এক ব্যক্তির কাছে ইয়াবা ককটেল বোমা রয়েছে। এমন সংবাদ পেয়ে এএসআই তানভির এএসআই সেলিমসহ সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালিয়ে টিটু নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করে। এ সময় তার কাছে রাখা ৪টি ককটেল ও ৩টি ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে টিটু অস্বীকার করেন।

টিটু উপজেলার কুচাইপট্রি ইউনিয়নের সোবাহান বেপারীর ছেলে এবং ওই দিনই তার বিয়ের গায়েহলুদ ছিল বলে জানা গেছে। ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়।

ধারণা করা হয়, ওই ব্যক্তিকে ফাঁসাতে পকেটে ইয়াবা ও একটি ব্যাগে বোমা রাখা হয়ে থাকতে পারে। পরে বাজার থেকে সোর্স আল আমিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন জানান, এ ঘটনায় সোহাগ ও রুবেলও ছিল। বাড়ি থেকে রুবেল ও সোহাগকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ফাঁসানোর পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেন তারা।

আল আমিনের স্বীকারোক্তির বরাতে পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী টিটু সরদারের আপন ভাই স্বপন সরদার ওমান থাকেন। সেখানে এক সময় তার সঙ্গে কাজ করতেন টিটু। কয়েক বছর পর টিটু তার কাজ ফেলে অন্য কোম্পানিতে কাজ নেয়। এসব বিষয় নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। ওমান থেকে বিষয়টি তার মোবাইল ফোনে বন্ধু আল আমিনসহ সোহাগ রুবেলকে জানালে তারা পরিকল্পনা করে কিভাবে টিটুকে ফাঁসানো যায়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী টিটুকে ফাঁসানোর জন্য ইয়াবা ও ককটেল ক্রয় করে।

ঘটনার দিন টিটুর গায়েহলুদ পরদিন বিয়ে- তাই দাশেরজঙ্গল বাজারে বিয়ের বাজার ও সেলুনে চুল কাটাতে আসছিলেন টিটু। পরে বাদামতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি অটোগাড়িতে উঠেন। অটোটি পট্টি ব্রিজে উঠতেই আল আমিন, সোহাগ, রুবেলসহ কয়েকজন তার অটোগাড়িটি গতিরোধ করে একপর্যায়ে টিটুকে অটো থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে চরথাপ্পড় দিতে থাকে। কিছু বুঝতে না দিয়ে কৌশলে ইয়াবা ট্যাবলেট তার পকেটে ঢুকিয়ে দেয় আর ককটেল বোমাসহ একটি শপিংব্যাগ তার হাতে দেয়। পরে আল আমিন পুলিশকে ফোন দিয়ে জানায় ইয়াবা ও ককটেল বোমা থাকার কথা। তবে পুলিশের তদন্তে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

টিটু মিয়া বলেন, আমি গত সপ্তাহে ওমান থেকে বিয়ে করার জন্য বাড়িতে এসেছি কিন্তু আমাকে ইয়াবা ও বোমা রেখে আমাকে ফাঁসানোর ছক আঁকে। তবে পুলিশের নিরপেক্ষ ও নিবিড় তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দিয়ে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম