অবমুক্ত করার পর পোষ মানা সেই সাদা বক কিছুই খাচ্ছে না
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পটুয়াখালীর বাউফলে পোষ মানা সেই সাদা বকটি অবমুক্ত করা হয়েছে। অবমুক্তির পর থেকে বকটি কিছু না খেয়ে নীরব ও স্থির অবস্থায় রয়েছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরের দিকে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের নুরাইনপুর বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘বকের বাড়িতে’ বকটি অবমুক্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয়ভাবে ‘বকের বাড়ি’ নামে পরিচিত নুরাইনপুর বাজার সংলগ্ন খানবাড়ির একটি বকের বাসা থেকে চার মাস আগে ঝড়ো বাতাসে একটি বকের ছানা পড়ে যায়। তখন একটি গুইসাপ সেটিকে আক্রমণ করলে স্থানীয় ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন এগিয়ে এসে সেটিকে উদ্ধার করেন। এরপর পরম যত্নে পরিচর্যা করে নিজের সন্তানের মতো বকের ছানাটি সুস্থ করে তোলেন তিনি।
পরে বকটি হেমায়েতের ভালোবাসার কাছে হার মেনে যায়। ব্যবসায়ী হেমায়েতের সঙ্গে বকের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে এলে বন বিভাগ ও প্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তারা হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় কোনো বন্যপাখিকে দীর্ঘদিন গৃহপালিত অবস্থায় রাখা যায় না।
অবমুক্তির পর থেকেই বকটি খাবারে অনীহা দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের ভাষ্য- বকটি যেন নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না। ব্যবসায়ী হেমায়েতের সঙ্গে তার যে সম্পর্ক ছিল, সেটির অভাব বোধ করছে বলে মনে হয়।
এ বিষয়ে মো. হেমায়েত উদ্দিন বলেন, আমি আইনকে শ্রদ্ধা জানাই। বন বিভাগের কর্মকর্তারা মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর আমার কাছে আসেন। আমি বকটি নিয়ে বাউফলে যাই। সেখানে অবমুক্ত করার চেষ্টা করলে সেটি উড়তে চায়নি। পরে ‘বকের বাড়িতে’ নিয়ে গেলে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের হাতে বকটি তুলে দিই। তারা সেটিকে অবমুক্ত করেন। যেখান থেকে পরে যেখানে আহত হয়েছিল, ঠিক সেই গাছেই সেটিকে অবমুক্ত করা হয়। কিন্তু গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত বকটি কিছুই খায়নি। আমার খুব কষ্ট লাগছে। বকটি আমার কাছে থাকলে নিয়মিত খাওয়াতে পারতাম। আরেকটু বড় হলে অবমুক্ত করলে ভালো হতো।
এ বিষয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তা বদিউজ্জামান খান বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর আমি নুরাইনপুর ঘটনাস্থলে যাই। বকটি যেহেতু নির্দিষ্ট স্থানে লালন-পালন করা হচ্ছিল, তাই অন্য কোথাও অবমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়- ‘বকের বাড়িতে’ যেহেতু আরও বকসহ বিভিন্ন পাখি রয়েছে, তাই সেখানেই বকটিকে অবমুক্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বকটি গতকাল থেকে কিছু খায়নি। এ বিষয়ে আমি মিটিংয়ে আলোচনা করেছি। সমস্যা হচ্ছে বকটি লালন পালনের কোনো সুযোগ নেই, এটি আইনে নিষিদ্ধ। গাছটির আশপাশে বকটির জন্য খাবার রাখার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।
