ঘুস বাণিজ্য করেও বহাল তবিয়তে ভূমি কর্মকর্তা
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নওগাঁর রাণীনগরে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুস বাণিজ্য করে এখনো বহাল তবিয়তে আছেন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) দুরুল হোদা। গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরও তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুরুল হোদা রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব)। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। তারপরও তিনি আছেন বহাল তবিয়তে। সেবাপ্রত্যাশীরা বলেছেন, তার খুঁটির জোর কোথায়?
গত ১৩ আগস্ট রাণীনগরের মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুস বাণিজ্য নিয়ে যুগান্তরে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হলে অফিসের প্রসেস সার্ভার কুদ্দুস ও পিওন সোহাগকে ১৯ আগস্ট বদলি করা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে নায়েব দুরুল হোদাকে বদলি কিংবা তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে ঘুস বাণিজ্যে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন নায়েব দুরুল হোদা। মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে যেন অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া ও ঘুসের রাজ্য বানিয়েছেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার কাশিমপুর ও মিরাট ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিস ছিল একটি, কাশিমপুরে। ভূমিসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রত্যন্ত এলাকা মিরাট ইউনিয়নের জন্য গত প্রায় নয় মাস আগে মিরাট ইউনিয়নের হামিদপুর বাজার এলাকায় নতুন করে মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস করা হয়। ওই ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) হিসেবে যোগদান করেন দুরুল হোদা। যোগদানের পর থেকেই তিনি নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুস বাণিজ্যে বেপরোয়া হয়ে উঠেন।
অভিযোগ উঠেছে—খাজনার অনুমোদন, খাজনার চেক করে দেওয়া, খারিজের প্রতিবেদন-প্রস্তাব, হোল্ডিং এন্ট্রি, মিসকেসের প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন ও ভুক্তভোগীর জমির সকল সমস্যা সমাধান করে দিতে দুই হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার, ২০ হাজার, এমনকি প্রায় লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুস নেন মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা দুরুল হোদা। সেবাপ্রত্যাশীরা তাকে চাহিদামতো ঘুস দিলেই মেলে কাজ, না দিলেই সেবাপ্রত্যাশীদের মাসের পর মাস হয়রানিতে পড়তে হয়।
তার বিরুদ্ধে রয়েছে অফিসে দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলারও অভিযোগ। তার মদদে অফিসের স্টাফদের মতো দুইজন দালাল থাকেন সব সময় অফিসে। দালালদের মধ্যস্থতায় সেবাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকেও হাজার হাজার টাকা ঘুস হাতিয়ে নেন।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য উপজেলার মিরাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা দুরুল হোদাকে মুঠোফোনে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে বক্তব্য না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর আমরা প্রাথমিক অনুসন্ধান করি। অনুসন্ধানে দুরুল হোদার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিভাগীয় মামলা রুজু করার লক্ষ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

-6901b4aa0764b.jpg)