Logo
Logo
×

সারাদেশ

৫৬ বছর বয়সে এইচএসসি পাশ করলেন শাম্মী আক্তার

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০১:২০ পিএম

৫৬ বছর বয়সে এইচএসসি পাশ করলেন শাম্মী আক্তার

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে খুলনার মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ থেকে এই বছর পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত

অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও পরিবারের অনুপ্রেরণায় ৫৬ বছর বয়সে এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছেন খুলনার শাম্মী আক্তার। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে খুলনার মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ থেকে এই বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি জিপিএ ৩.১৮ পেয়ে সাফল্য অর্জন করেন।

শাম্মী আক্তার জানিয়েছেন, তার এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে নিজের মনোবল, স্বামী ও সন্তানের উৎসাহ এবং অদম্য ইচ্ছাশক্তির মিশ্রণ। ১৯৮৮ সালে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হওয়ায় পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। সংসার, সন্তান ও দায়িত্বের মাঝে শিক্ষার স্বপ্ন কখনো ভেঙে যায়নি তার।

২০১৯ সালে ছেলে ও স্বামীর উৎসাহে আবারও পড়াশোনার আগ্রহ জাগে তার মনে। খুলনার ইকবাল নগর বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও কোর্স বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং বদলি প্রতিষ্ঠান থেকেও ভর্তি বাতিলের খবর পাওয়ায় এক পর্যায়ে ভেঙে পড়েছিলেন। তবে ২০২১ সালে এক শিক্ষকের খুদে বার্তায় নতুনভাবে শুরু হয় তার আশা। স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়মিত পড়াশোনা শুরু করেন। ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করার পর তিনি উদ্যোক্তা হিসেবে বেকারত্ব দূর করার উদ্যোগও নেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খুলনার করিমনগরের বাড়িতে একটি ছোট ব্যবসা শুরু করেন। 

শাম্মী আক্তার বলেন, প্রতিদিনের পরিশ্রম ও ধৈর্যই আমাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। সব কাজ শেষ করার পর রাত ১১টার পরে পড়তে বসতাম। কোনো প্রাইভেট শিক্ষক ছিল না, অনেক সময় ইংরেজি ইউটিউব দেখে শিখেছি। কখন যে রাত ১টা বা ৩টা বাজে যেত, টেরই পাইনি।

তিনি আরও বলেন, আমার খুব ইচ্ছা ছিল উচ্চ ডিগ্রি নেওয়ার, কিন্তু পারিনি। দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন বিবাহ হয়। তারপর সন্তানদের দিকে বেশি মনোনিবেশ করেছি। তাদের সফলতা আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। এই বয়সে এসে অনেকে পারবে কিনা জানি না, কিন্তু ইনশাআল্লাহ আমি পেরেছি। বয়স শুধু একটা সংখ্যা মাত্র। আমি সামনে পড়াশোনা চালিয়ে যাব, এবার অনার্সে ভর্তি হব।

শাম্মীর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট হাফিজুর রহমান মোল্লা বলেন, আমি সবসময় পাশে থেকেছি। বলেছি, ভালো ফলাফল লাগবে না, পাস করে আসো। এতে সমাজের জন্যও কিছু করা সম্ভব। দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতা করেছি।

শাম্মীর বড় ছেলে মামুনুর রশীদ বলেন, আমি পৃথিবীর কম সংখ্যক সন্তানদের মধ্যে একজন যে তার মায়ের সাফল্যে এত আনন্দিত। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। আমাদের সেই স্বপ্নের বহিঃপ্রকাশ এটি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম