বগুড়ায় বৃষ্টিতে নুয়ে পড়েছে পাকা ধান, সবজিখেতে পানি
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ায় গত কয়েক দিন অবিরাম বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত চার দিনে ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিতে জমির পাকা ও আধপাকা রোপা আমন ধান পানিতে হেলে পড়েছে। এছাড়া শীতের আগাম সবজিখেতে পানি জমে গেছে। এতে কৃষকরা তাদের কষ্টার্জিত ধান ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, ধান গাছ হেলে পড়লেও তেমন ক্ষতি হবে না। রোদ উঠলে জমির পানি নিষ্কাশন করলে সবজির তেমন ক্ষতি হবে না।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস ও বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত বগুড়ায় ১২৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এতে বগুড়া সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় ঝড়ো বাতাসে অনেক জমির পাকা ও আধপাকা রোপা আমন ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। এছাড়া জমিতে থাকা আগাম আলুসহ বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আতঙ্কিত কৃষকরা জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে অনেক স্থানে তাদের জমিতে থাকা পাকা ও আধপাকা রোপা আমন ধান গাছ মাটিতে হেলে পড়েছে। কোনো কোনো স্থানে ধানগাছ পানিতে ডুবে গেছে। এ অবস্থায় তারা ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। ধানগুলো ঘরে তোলা নিয়ে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া অতিবৃষ্টিতে শীতের আগাম সবজিখেতে পানি জমেছে। বৃষ্টি না থামলে এসব শাকসবজি পচে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। এসব ফসল বাঁচাতে কৃষকরা জমি থেকে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর জেলায় এক লাখ ৮৩ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। আগাম আলু রোপণ করা হয়েছে ৩৫৫ হেক্টর জমিতে। বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় পাকা ও আধপাকা রোপা আমন ধান গাছ নুয়ে পড়ায় কৃষি বিভাগ জমিতে থাকা পানি নিষ্কাশনের জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়ে মাঠপর্যায়ে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে।
তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, আবহাওয়া ভালো হলে দুই তিন দিনের মধ্যেই জমির পানি সরে যাবে। এতে নুয়ে পড়া ধান গাছের তেমন ক্ষতি হবে না। ক্ষতি থেকে বাঁচতে তারা হেলে পড়া ধান গাছগুলো ঝুঁটি বেঁধে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে বগুড়ার নন্দীগ্রাম, ধুনট, আদমদীঘি, শেরপুর ও সোনাতলা উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই-তিন দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় অধিকাংশ জমিতে থাকা পাকা এবং আধপাকা ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। এছাড়া শীতের আগাম শাকসবজির ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মরিচ, বেগুন, মুলার ক্ষেতে পানি জমে গেছে। কৃষকরা নিজ উদ্যোগে জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছেন।
ধুনটের চালাপাড়া গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে তার জমিতে লাগানো রোপা আমনের ফলন প্রতি মণে ১০ কেজি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ছামিদুল ইসলাম জানান, ধানের জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য সব উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করে জরুরি পরামর্শ দিয়ে মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। জমির পানিতে নুয়ে পড়া ধানের তেমন ক্ষতি হবে না।
