Logo
Logo
×

সারাদেশ

১৩ মাথার নারকেল গাছ দেখতে দর্শকদের ভিড়

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম

১৩ মাথার নারকেল গাছ দেখতে দর্শকদের ভিড়

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের কাছিকাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ১৩ মাথাওয়ালা নারকেল গাছ। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের কাছিকাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে আছে প্রকৃতির এক আশ্চর্য সৃষ্টি—১৩ মাথাওয়ালা নারকেল গাছ।

দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন একসাথে অনেকগুলো গাছ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। তবে কাছে গেলে বোঝা যায়, এটি আসলে একক কাণ্ড থেকে জন্ম নেওয়া ১৩টি মাথাওয়ালা একটি গাছ। স্থানীয়দের কাছে এটি পরিচিত ‘কুদরতি নিদর্শন’ হিসেবে।

বিরল এই গাছটি দেখতে প্রতিদিনই আশপাশের গ্রামের মানুষজন ভিড় করছেন। এমনকি দূরদূরান্ত থেকেও কৌতূহলী দর্শনার্থীরা ছুটে আসছেন। কেউ গাছটির মাথা গুনছেন, কেউ আবার মোবাইল ফোনে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন বিস্ময়ের গল্প।

শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে দেখা যায়, একসময় গাছটির মাথা ছিল ১৪টি, বর্তমানে ১৩টি মাথা সবুজ ও সতেজ রয়েছে। প্রতিটি মাথায় ঘন পাতার বিন্যাস এমনভাবে ছড়ানো যে মনে হয়, প্রকৃতি নিজেই যেন এক অনন্য শিল্পকর্ম এঁকেছে।

কাছিকাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক নজরুল ইসলাম বলেন, গাছটির বয়স প্রায় ২৫ থেকে ২৬ বছর। লাগানোর কয়েক বছর পর থেকেই কাণ্ডে একাধিক মাথা গজাতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে মাথার সংখ্যা বেড়েছে, আবার কিছু শুকিয়েও গেছে। বর্তমানে ১৩টি টিকে আছে। কলেজের পক্ষ থেকে নিয়মিত সার ও ওষুধ দিয়ে পরিচর্যা করা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমার জীবনে এমন গাছ আর দেখিনি। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে এই গাছ দেখতে, বিস্মিত হয়। এটি নিঃসন্দেহে প্রকৃতির এক অনন্য রূপ।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাকিল আহমেদ বলেন, ‘একটি নারিকেল গাছের এতগুলো মাথা—এমন দৃশ্য আর কোথাও দেখা যায় না। এটি আল্লাহর ‘কুদরতি নিদর্শন’। বর্তমানে গাছের ১৪টি মাথা আছে, যার ১৩টি সতেজ। এর আগে আরও মাথা ছিল। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ গাছটি দেখতে আসে—এটি আমাদের জন্য সত্যিই অনেক গর্বের বিষয়।’

গাছটি ঘিরে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যেও রয়েছে উচ্ছ্বাস। কাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মিম জানায়, ‘নারিকেল গাছের ১৪টি মাথা দেখতে অনেক মানুষ আমাদের স্কুলে আসে। গাছটি দেখে সবাই খুশি হয়, বিষয়টি আমাদেরও ভালো লাগে।’ 

এলাকাবাসীর দাবি, এই বিরল নারিকেল গাছটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা গেলে এটি স্থানীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। এতে একদিকে যেমন বাড়বে এলাকার পরিচিতি, তেমনি দর্শনার্থীরা প্রকৃতির এই বৈচিত্র্য কাছ থেকে উপভোগের সুযোগ পাবেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে. এম. রাফিউল ইসলাম বলেন, ‘একটি নারিকেল গাছে ১৩-১৪টি মাথা বের হওয়া সাধারণত দেখা যায় না। এটি একটি বিরল ঘটনা, যা জেনেটিক কারণে হয়েছে। এই গাছের কারণে গুরুদাসপুর এলাকায় দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে। গাছটির সঠিক পরিচর্যা ও সার ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তত্ত্বাবধান করবেন। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে এটি যেন ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, সে বিষয়ে কৃষি অফিস সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম