বিএডিসি কর্মকর্তার হেফাজতে থাকা ৭ হাজার খালি বস্তা ‘গায়েব’
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) উপসহকারী পরিচালক এসএম শাহীনুল হক শাহীন নিজ হেফাজতে থাকা সরকারের সাত সহস্রাধিক বস্তা ‘গায়েব’ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
দুই বছর আগে বদলির আগে প্রায় সাত লাখ টাকা মূল্যের বস্তাগুলো বুঝে না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
বগুড়া বিএডিসির উপ-পরিচালক (বীজ উৎপাদন) শামীনা পারভীন সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই কর্মকর্তা ফেরত দেওয়ার লিখিত অঙ্গীকার করেন। তাকে চিঠি দেওয়া হলেও তিনি আজ পর্যন্ত বস্তাগুলো ফেরত দেননি।
অভিযোগে জানা গেছে, এসএম শাহীনুল হক শাহীন বিএডিসির উপসহকারী পরিচালক পদে ফুলদীঘি কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। ২০২৩ সালের ৫ মার্চ একই পদে বনানীর বিএডিসি কার্যালয়ে বদলি হন। এ সময় গুদাম বিভাগের দায়িত্বরত ওই কর্মকর্তা তার হেফাজতে থাকা সরকারি ১০ হাজার ৭৩৬ পিস বস্তার মধ্যে মাত্র তিন হাজার ২৯টি জমা দেন। অবশিষ্ট সাত হাজার ৭০৭টি বস্তা জমা দেননি।
এদিকে বস্তাগুলো জমা না দেওয়ায় বিএডিসির উপ-পরিচালক (বীজ উৎপাদন) শামীনা পারভীন চলতি বছরের ১৯ মে চিঠিতে বিএডিসির উপসহকারী পরিচালক এসএম শাহীনুল হক শাহীনকে ৩০ দিনের মধ্যে বস্তাগুলো জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০২৪-২৫ উৎপাদন বর্ষের বোরো ধানবীজ সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান। প্রয়োজনীয় বস্তা না থাকায় কেন্দ্রের বীজ সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বিএনডিসি অফিস নথিতে সংযুক্ত ২০২৩ সালের ৫ মার্চের একটি অঙ্গীকারনামায় এসএম শাহীনুল হক শাহীন স্বীকার করেন যে, তার কাছে ১০ হাজার ৭৩৬টি বস্তা ও একটি ছিটমিলার মেশিন পাওনা আছে। তিনি তা পরিশোধে বাধ্য থাকবেন।
ওই অঙ্গীকারনামায় শাহীনুল হকের সঙ্গে আরও স্বাক্ষর করেন, উপ-পরিচালক (বীজ উৎপাদন) শামীনা পারভীন এবং সহকারী পরিচালক (বীজ প্রত্যয়ন) দুলারী চাঁদনী। তবে অঙ্গীকারনামা অনুযায়ী দুই বছর অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি শাহীনুল হক শাহীন বস্তাগুলো জমা দেননি।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা অভিযুক্ত উপসহকারী পরিচালক এসএম শাহীনুল হক শাহীন নিজেকে সাংবাদিক পরিবারের সন্তান দাবি করে বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক। তিনি বস্তাগুলো জমা দিয়েছেন। আর এ সংক্রান্ত চিঠি তার কাছে আছে। তবে তিনি কোনো চিঠি দেখাতে পারেননি।
সোমবার বিকালে বগুড়া বিএডিসির উপ-পরিচালক (বীজ উৎপাদন) শামীনা পারভীন বলেন, অভিযুক্ত উপসহকারী পরিচালক এসএম শাহীনুল হক শাহীনের হেফাজতে ১০ হাজার ৭৩৬টি ছিল। বদলির সময় বস্তাগুলো ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। পরবর্তীতে তিনি তিন হাজার ২৯ পিস বস্তা ফেরত দিয়েছেন। তার কাছে এখনও সাত হাজারের বেশি বস্তা পাওনা আছে। এ ব্যাপারে কয়েক মাস আগে তাকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি বস্তা আত্মসাৎ করার কোনো সুযোগে নেই। তাকে ফেরত দিতেই হবে। বিষয়টি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
