|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শনিবার রাতের হামলা ভাঙচুরের পর থেকে বরিশালের সঙ্গে সারা দেশের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘট কিংবা কর্মবিরতির কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও বাস চালানো বন্ধ রেখেছেন বরিশালের বাস মালিক ও পরিবহণ শ্রমিকরা।
একই সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলাগুলোর মালিকরাও বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের সব রুটে বাস চালাচ্ছে না। ফলে কেবল বরিশালই নয়, দক্ষিণাঞ্চলের সব রুটেই বন্ধ বাস চলাচল।
বাসে হাফ ভাড়া দেওয়া নিয়ে শনিবার বিএম কলেজের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে হামলা চালায় বিএম কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী। তারা টার্মিনাল ভবন ভাঙচুরের পাশাপাশি সেখানে থাকা শতাধিক বাসে ভাঙচুর চালায়। একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তা নিভিয়ে ফেলেন।
পরিবহণ শ্রমিকদের অভিযোগ হামলা ভাঙচুর চলাকালে দূরপাল্লার পরিবহণ কাউন্টারে থাকা বিপুল অর্থ লুটে নেওয়া হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের হামলায় ২০-২৫ জন শ্রমিক আহত হন। সব কাউন্টার ভেঙে ফেলে শিক্ষার্থীরা।
বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি, হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় মুলাদী থেকে বরিশাল আসা এক শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করে পরিবহণ শ্রমিকরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পরিবহণ শ্রমিকরা। এতে বিএম কলেজের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। বাস শ্রমিকরা নিজেরাই বাস ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর দায় চাপাচ্ছে।
শতাধিক বাস, টার্মিনাল ও কাউন্টার ভাঙচুরের পর শনিবার রাত থেকেই বন্ধ হয়ে যায় বরিশাল তথা পুরো দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের বাস চলাচল। রোববার সকালে টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় ভেঙে ফেলা বাসের সারি। পুরো টার্মিনালে একটি বাসও অক্ষত নেই।
মালিক সমিতির নেতারা জানান, সমিতির অধীনে ১৯০টি বাস রয়েছে। এর মধ্যে ৪০টির মতো বাস বাইরে ছিল। বাকি দেড়শ বাসই ভাঙচুর করা হয়েছে। কোনো বাসের একটি কাঁচ-ও অক্ষত নেই। মেরামত না করে এর একটিও রাস্তায় নামানো সম্ভব হবে না।
বাস বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লা, কোথাও যেতে পারছেন না তারা। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে কুষ্টিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে টার্মিনালে আসা সরকারি চাকরিজীবী আহসান মোহাম্মদ বলেন, এত দূরের পথ তো অন্য কোনো বাহনেও যাওয়া যাবে না।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা তো কোনো ধর্মঘট ডাকিনি। একটা বাসও তো আস্ত নেই। চালাব কী?’
দূরপাল্লার রুটের বাস বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বোধহয় নিরাপত্তার অভাবে তারা বাস চালানো বন্ধ রেখেছে। হামলা ভাঙচুরের শঙ্কা থাকলে মালিকরা বাস চালাবে না সেটাই তো স্বাভাবিক।’ শনিবার রাতের হামলায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
