শহীদ মাসুদের মা বিবি কুলসুমের ক্ষোভ
শহীদের রক্তকে পুঁজি করে ক্ষমতায় যেতে বিভোর রাজনৈতিক দলগুলো
দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৭ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দাগনভূঞার শহীদ সারওয়ার জাহান মাসুদ। শহীদ মাসুদদের রক্তকে পুঁজি করে ক্ষমতায় যেতে বিভোর রাজনৈতিক দলগুলো। লোক দেখানো কিছু কর্মসূচি ও অনুদান দিয়ে মনে হয় বিশ্ব জয় করেছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। খোঁজ নিচ্ছে না ছেলে হারানো পরিবারের দিন কেমন কাটছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় হয়েছে শুনে খুশি হয়েছি। আর কোনো ফ্যাসিস্ট জন্ম নিয়ে রক্তের হোলি খেলা খেলে ক্ষমতা ভোগ করবে না বলে এ রায়ে সতর্ক হবে।
ক্ষোভ, বেদনা ও খুশি নিয়ে দাগনভূঞার শহীদ সারওয়ার জাহান মাসুদের মা বিবি কুলসুম যুগান্তরকে শেখ হাসিনা ফাঁসির রায়ে এ কথাগুলো বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
তিনি মনে করেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের দানবীয় কায়দায় ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নসাধ তাসের মতো গুঁড়িয়ে দিয়েছে চাঞ্চল্যকর কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারীরা। রাজনৈতিক দলগুলো ১৬ বছর গর্তে লুকিয়ে ছিল। এখন গর্ত থেকে উঠে স্বৈরাচার পতন তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা করেছে বলে শহীদদের আত্মত্যাগ হরণ করে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণে উঠে পড়ে লেগেছেন। বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা দাগনভূঞায় এলে শহীদ মাসুদের কবর জিয়ারত করার প্রয়োজনীয়তা মনে করেননি।
এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের কৌশল্যা গ্রামের শহীদ আরিফের পিতা আলতাফ হোসেন ও দুধমুখা ইউনিয়নের ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁনপুর এলাকার ওছি উদ্দিন ভূঞা বাড়ির মৃত আবুল হাসেমের ছোট ছেলে শহীদ শিবলুর স্ত্রী রীমা আক্তার।
রীমা আক্তার যুগান্তরকে বলেন, আমার স্বামী শিবলু গত বছর ২১ জুলাই বিকালে ছেলে ফারহানকে নিয়ে আবদুল্লাহপুর রেলগেটে হাঁটাহাঁটির পর দুইজনে বসা ছিল। তখন গোলযোগ শুরু হলে বাসায় যেতে ছেলেকে নিয়ে উঠে দাঁড়ালে শিবলুর মাথার বামপাশে গুলিবিদ্ধ হন। আশপাশের লোকজন তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান। শিবলুকে বাঁচাতে চার ব্যাগ রক্ত দেওয়া হলেও বাঁচেনি। ওই দিন পূর্ব উত্তরা থানায় সংঘর্ষ হলেও অপরপ্রান্তে দক্ষিণখান থানা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয় শিবলু। উভয় থানায় শরণাপন্ন হয়েও কেউ মামলা নেয়নি। ফলে পোস্টমর্টেম ছাড়াই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শিবলুকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে হয়।
জুলাই আন্দোলন জুলাই আন্দোলনকারীদের হাতে নেই বলে মনে করেন শহীদ পরিবারের সদস্যদের। তারা মনে করেন রাজনৈতিক নেতাদের হাতে শহীদের রক্ত তুরুপের তাস। তবে কিঞ্চিত সান্ত্বনা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বাংলার মাটিতে ফাঁসির রায় ঘোষণা হয়েছে। হাসিনার ফাঁসির রায় কার্যকর হলে সন্তানহারা আমাদের পরিবার শান্তি পাবে।
