দেশের মালিক সরকার নয়, জনগণ: সুলতানা কামাল
নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৬ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, সরকার কেন ভুলে যায়, তারা দেশের মালিক নন। দেশের মালিক হলো জনগণ। জনগণকে হেফাজত করতেই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের ক্ষমতায় বসায়।
সোমবার দুপুরে নাটোর জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সমতল আদিবাসী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সুলতানা কামাল বলেন, একটি রাষ্ট্র জনগোষ্ঠী তৈরি করে না, জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রকে পরিচয় দেয় এবং রাষ্ট্র পরিচালনা করে।
তিনি বলেন, এক সময় বাংলাদেশ ছিল না, পাকিস্তান ছিল। ভারত নামেও রাষ্ট্র ছিল না, অন্য নামে ছিল। কিন্তু মানুষ ছিল। মানুষের পরিচয় ছিল। যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় যান, তারা ভুলে যান রাষ্ট্র জনগোষ্ঠীকে তৈরি করে না। জনগোষ্ঠী রাষ্ট্র তৈরি করে। তারা অন্যায় ভাবে বলার চেষ্টা করেন, তুমি বা সে। তুমি সে ওই এসব বলার অধিকার কিন্তু রাষ্ট্রের নেই। যদি আপনাকে কেউ বলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এটা অন্যায়ভাবে বলেন এবং তাদের এটা বলার কোন অধিকার নেই। আপনারা যে ভাবে যুগ যুগ ধরে পরিচয় দিয়ে এসেছেন জন্মগত ভাবে সেই ভাবেই পরিচয় দেবেন।
ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে নিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, ক্ষুদ্র একটি আপেক্ষিত শব্দ। এটা কোনো মানুষের পরিচয় হতে পারে না।
তিনি বলেন, যারা সংবিধান রচনা করেন তারা তো অনেক উচ্চ ব্যক্তি। তারা কি ভাবে সংবিধানে এ ত্রুটিগুলো লিখেন। আমরা ত্রুটি সংশোধনের দাবি জানাই। যত দিন সংশোধন না হয়, সংবিধানে কোনো ব্যক্তি বা কোন জনগোষ্ঠীর নামে বৈষম্য থাকা যাবে না। সেখানে যখন কোন জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা হয়। যারা করেন সেটা অসাংবিধানিক কাজ করেন। তারা সংবিধানকে লঙ্ঘন করেন, অশ্রদ্ধা করেন। আমরা সচেতন নাগরিক হিসেবে এটা হতে দিতে পারি না। আমরা দাবি প্রতিবাদ জানাতেই থাকব।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সংস্কৃতির অধিকার থাকবে। এ দেশ হবে সাম্যের দেশ, ন্যায় বিচারের দেশ এবং মানবিক মর্যাদার দেশ। কোন দেশে জনগোষ্ঠী যদি শঙ্কায় বাস করে, সেটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। কোন মানুষ যদি মনে করে তার মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষিত হচ্ছে না সেটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে।
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট এর প্রধান নির্বাহী জিন্নাত আরা হক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর নুজহাত জাবিন।
আরও বক্তব্য রাখেন- মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নীলা হাফিয়া, পিকেএসএস এর নির্বাহী পরিচালক ডেইজি আহমেদ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা আশিকচন্দ্র বানিয়াজ, আদিবাসী কমিউনিটি সদস্য লাবনী এক্কা, মাধবী রাণী প্রমুখ।
