একসঙ্গে জন্ম নেওয়া সেই পাঁচ শিশুই অসুস্থ, শেবাচিমে ভর্তি
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বরিশালে একসঙ্গে পাঁচ নবজাতকের জন্মের প্রায় দুই মাস পর ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত কয়েক দিনে একে-একে পাঁচজন শিশুই অসুস্থ হয়ে পড়ে।
তাদের বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসা খরচ মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন বাবা মুদি দোকানি সোহেল হাওলাদার।
বিয়ের পাঁচ বছর পর সোহেল ও লামিয়া দম্পতির সংসার আলোকিত করে আসা এই শিশুদের চিকিৎসা নিশ্চিতে সমাজের বিত্তবানসহ সরকারের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
তথ্যমতে, গত ৬ অক্টোবর বরিশাল নগরীর হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিকস হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ছাড়াই একসঙ্গে তিন পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান জন্ম দেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের সিংহেরকাঠি গ্রামের ওই গৃহবধূ। জন্মের পর বাবা-মায়ের একবুক ভালোবাসায় তাদের নাম রাখা হয়- হাসান, হোসাইন, মোয়াছিন, হাবিবা এবং উমামা।
এ ঘটনা সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি করলেও বাবা-মায়ের চরম অর্থ সংকটে পড়েন শিশুদের বাবা-মা। জন্মের পর থেকে তারা শারীরিকভাবে সুস্থ ছিল; কিন্তু শীত শুরুর পর থেকেই পর্যায়ক্রমে শিশুরা অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর তাদের ভর্তি করা হয় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে; কিন্তু আগে থেকেই অর্থ সংকটে থাকা এই দম্পতি বর্তমানে অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে পারছেন না।
এ খবরে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) শেবাচিম হাসপাতালের শিশু বিভাগে যান বরিশাল জেলা সমাজসেবা অফিসের উপ-পরিচালক একেএম আখতারুজ্জামান তালুকদার ও সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ। তারা তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতাল পরিচালকের সহযোগিতায় পাঁচ শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, দেন আর্থিক সহায়তাও।
এই শিশুদের জন্মের সময়ও তাদের ইভেন্ট ৮৪-এর উদ্যোগে একটি গাভিসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল।
পাঁচ শিশুর মা লামিয়া আক্তার বলেন, আমার মা ও আমি মিলে শিশুদের লালন পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। প্রতিদিন তাদের পেছনে খরচ অন্তত ২ হাজার টাকা। এক কৌটা দুধে দুই দিনের খাবার হয় না শিশুদের। প্রতিদিন দরকার হয় কমপক্ষে ১০টি ডায়াপার। শীত শুরুর পর তাদের পর্যাপ্ত গরম কাপড়েরও ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়েছি। এ কারণে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
পাঁচ সন্তানের বাবা মুদি দোকানদার সোহেল বলেন, আমার সন্তানরা যত বড় হচ্ছে খরচও ততই বাড়ছে; কিন্তু আমার স্বল্প ব্যয় দিয়ে তাদের ভরণপোষণে বারবার ব্যর্থ হয়েছি। বাবা হিসেবে যা খুবই কষ্টের ও হতাশার। এই অর্থ সংকটের মধ্যে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ায় সংকট আরও বেড়েছে। এ মুহূর্তে সহায়তা না পেলে আমার শিশুদের কষ্ট আরও বাড়বে।
বরিশাল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক একেএম আখতারুজ্জামান তালুকদার বলেন, চিকিৎসার জন্য আমরা বিনামূল্যে ওষুধের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তাছাড়া ১৫ দিন খাওয়ার মতো দুধ প্রদান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে শিশুদের ব্যয়ভার মেটাতে স্থায়ী সহযোগিতা দরকার। তাই সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
