আগাম আলু যে দামে বিক্রি করছেন কৃষকরা
আব্দুর রাজ্জাক, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আগাম আলু উৎপাদনে বিখ্যাত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা। চলতি মৌসুমে নতুন আলু তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। এবার বাজার দর ভালো না হলেও আবাদের কমতি নেই। বিগত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক দরে বিক্রি হচ্ছে নতুন আলু। আর্থিক লাভ-ক্ষতি যাই হোক না কেন কৃষকরা এখন আলু তোলার উৎসবে মেতেছেন।
সরেজমিন জানা যায়, এবার অনুকূল আবহাওয়ায় দিগন্তজোড়া আলুখেতে সবুজের ঢেউ যেন বাম্পার ফলনের হাতছানি দিচ্ছে। ভালো বাজার দর পেলে কৃষকেরা গত বছরের আলুর ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবেন। অন্যথায় ডাবল লোকসানে আলু চাষিরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে মূলধন হারাবেন।
চলতি মৌসুমে আগাম আলু চাষিরা ইতোমধ্যে জমি থেকে নতুন আলু উত্তোলন শুরু করেছেন। প্রতি কেজি নতুন আলু পাইকারদের কাছে ৫১/৫২ টাকা দরে বিক্রি করছেন। আশ্বিন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে অধিক ঝুঁকি নিয়ে তারা আগাম আলু রোপণ করেছিল। রোপণের ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মাথায় জমি থেকে তোলা শুরু করেছেন।
বুধবার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি মজেতুল্লা মেম্বারেরপাড়া গ্রামের কৃষক এজাবুল হক লাল বাবু তার ৪ বিঘা জমির ৫৮ দিন বয়সি আগাম আলু তুলছেন। এ আলু তুলে কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই মাঠে স্থানীয় ব্যবসায়ীর কাছে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।
তিনি বলেন, চলতি বছর ১১ বিঘা জমিতে আগাম আলু লাগিয়েছি। জমি উঁচু হওয়ায় আশ্বিনা বৃষ্টিপাতে তেমন ক্ষতি হয়নি। এর মধ্যে ৪ বিঘা জমির আলু তুলতেছি। গত বছর এ জমি আগাম আলু ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। এবার তেমন একটা লাভ হবে না।
এছাড়া রনচন্ডি ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামের শমসের হাজি ৪ বিঘা জমির আলু উত্তোলন করে ৫১ টাকা কেজি দরে মাঠে বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, চাহিদা এবং ভালো দামের আশায় ৫৪ দিন বয়সি আলু আগেভাগে তুলছি। বৃষ্টিপাতে আলুখেত ক্ষতিগ্রস্ত না হলে লাভবান হতাম।
এদিকে উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক অহেদুল, তরিকুল, মিনারুলসহ অনেক কৃষক বেশি দামের আশায় বুধবার দিনভর আলু তুলে রাতে ট্রাকযোগে ঢাকার কারওয়ানবাজার, শ্যামবাজার নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। তারা বলেন, জমিতে পাইকাররা দাম কম করছে। ভালো দামের আশায় সবার আলু একসঙ্গে করে সরাসরি ঢাকার বাজারে নিয়ে যাওয়ার নিয়ত করেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৪ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে আগাম আলুর চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আলুর ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে। পুরোনো আলুর দাম কম হলেও ভোক্তাদের কাছে এর চাহিদা ও কদর নেই। নতুন আলুর বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন ও ভালো বাজার মূল্য পেয়ে কৃষকেরা লাভবান হবেন।
