অভ্যুত্থানে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে হামলা, হাসিনাসহ ২৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৫ পিএম
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ায় চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে প্রধান করে ২৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন জুলাইযোদ্ধা নাজমুল হোসেন।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন সদর থানার ওসি হাসান বাসির। মামলায় ১৪৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এর মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাদী জুলাইযোদ্ধা নাজমুল হোসেন নিশিন্দারা উপশহরের বেলাল হোসেনের ছেলে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নাজমুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য। শেখ হাসিনার পতনের একদফা দাবিতে তারা কয়েকজন গত ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে সেউজগাড়ী আমতলা মোড়ে পৌঁছলে শেখ হাসিনার হুকুমে আসামিরা মিছিলে বাধা দেয়। এরপর রাজাকারের বাচ্চা বলে গালিগালাজ করাসহ হত্যার হুমকি দেয়। শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্যতম আসামিরা হাতে থাকা ককটেল, হাতবোমা ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে নিক্ষেপ করে। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এছাড়া মিছিল লক্ষ্য করে বন্দুক দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেন আসামিরা। তাদের গুলিতে তিনি (বাদী) বাম পায়ের গোড়ালি, পিঠ ও মাথায় লেগে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় সঙ্গে থাকা অন্যান্য ছাত্র-জনতাও আহত হন ও গুলির ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যান অনেকে। তখন আশপাশে থাকা কতিপয় ছাত্র-জনতা তাকে উদ্ধার করে মোটরসাইকেলে শাজাহানপুর উপজেলার বি-ব্লক এলাকায় কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করান। পরবর্তীতে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা নেন। পরিপূর্ণ উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান জানান, মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় শাহীন ও জাহাঙ্গীর নামে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন- বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি মজিবর রহমান মজনু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়, বগুড়া-১ আসনের সাবেক এমপি সাহাদারা মান্নান, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, ছাত্রলীগ নেতা শামিমা আক্তার সুমি, যুবলীগ নেতা জাকারিয়া আদিল, আন্দোলনে আওয়ামী লীগের অর্থদাতা মো. খোয়াইব, বগুড়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদী আলম লিপি, বগুড়া-৭ আসনে ডামি প্রার্থী মোস্তাকিম সরকার, শিবগঞ্জের জাপা নেতা আমিনুর ইসলাম মাস্টার, যুবলীগ নেতা উদয় কুমার বর্মণ, আওয়ামী লীগ ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জুলফিকার রহমান শান্ত, জাপা নেতা গোলাম রব্বানী রতন, জান্নাতী আক্তার সাধনা, ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পী দাস, আওয়ামী লীগ নেতা ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান শ্যামল, যুবলীগ নেতা আশিকুর রহমান আশিক, আওয়ামী লীগ নেতা শাহরিয়ার আরিফ ওপেল, আওয়ামী লীগ নেত্রী নিলুফা শারমিন রিতা, জেলা ছাত্রলীগ নেতা মুকুল ইসলাম, ধুনট আওয়ামী লীগ নেতা এজিএম বাদশাহ, আওয়ামী লীগ নেত্রী সনিতা নাসরিন প্রমুখ।
