Logo
Logo
×

সারাদেশ

প্রশাসনের লোক দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে অভিভাবকদের বাধা

Icon

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম

প্রশাসনের লোক দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে অভিভাবকদের বাধা

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শ্রেণিশিক্ষক ছাড়া প্রশাসনের লোক দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে দিলেন না অভিভাবকরা। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। 

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় ভৈরব শহরের মোজাফফর বেপারী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

সরেজমিন দেখা যায়, সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা দূর করা, সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির ব্যবস্থা করা- এমন তিন দফা দাবিতে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। ফলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের জন্য ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে মোজাফফর বেপারী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে উপজেলা কৃষি অফিসের দুইজন কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এমন সময় বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা শ্রেণিশিক্ষক ছাড়া অন্য কারো কাছে পরীক্ষায় বসতে দিবে না বলে বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান তুলে প্রতিবাদ জানান। 

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিফাত বলে- রুটিন অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর আমাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা; কিন্তু সেদিন পরীক্ষা দিতে এসে জানলাম স্কুলের স্যারদের বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করছেন। দীর্ঘ ৫ বছর যাবত স্কুলের স্যাররা আমাদের পড়িয়েছেন তাদের ছাড়া আমরা অন্য কারো কাছে পরীক্ষা দেব না। তাই সরকারের কাছে দাবি তারা যেন আমাদের স্যারদের দাবি মেনে আমাদের পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করে দেন। 

আরেক অভিভাবক বলেন, হঠাৎ করে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষা নিতে চাইলেই তো পরীক্ষা নেওয়া যায় না। পরীক্ষার জন্য তো শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিতে হয়। এছাড়া যারা সারা বছর আমাদের বাচ্চাদের মনোযোগ সহকারে পড়িয়েছেন তাদের ছাড়া অন্য লোকদের কাছে আমাদের ছেলেদের পরীক্ষা দিতে দেব না। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা রত্না বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে হয়। সেজন্যই আমরা সকালে পরীক্ষা শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এমন সময় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের শ্রেণিশিক্ষক ছাড়া অন্য কারো কাছে পরীক্ষা দিতে দেবেন না বলে জানান। আমরা তাদের অনেক বুঝিয়েছি; এমনকি ভয়ও দেখিয়েছি তবুও তারা পরীক্ষায় বসেনি। এখন বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি; উনারা যে সিদ্ধান্ত দেন সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করব। 

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ভৈরব উপজেলায় ৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তাদের মধ্য সব স্কুলে আজকে থেকে বিশেষভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে; তবে দুটি স্কুলে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। এ বিষয়ে আমরা অনুসন্ধান করছি- এ ঘটনায় যদি কোনো শ্রেণিশিক্ষকের ইন্ধন থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম