ভোলা–বরিশাল সেতুর দাবিতে বোরহানউদ্দিনে ইউএনও অফিস ঘেরাও
বোরহানউদ্দি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ভোলা–বরিশাল সেতুর দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দীর্ঘদিনের ক্ষোভ এবার রাস্তায় নেমেছেন ভোলার সাধারণ জনগণ।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কার্যালয় ঘেরাও করে এলাকাবাসী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
বেলা ১২টার দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন—কুতুবা, টবগী, বড় মানিকা, দেউলা, সাচড়া ও হাসান নগর, কাচিয়া, গংগাপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও পায়ে হেঁটে সাধারণ মানুষ বোরহানউদ্দিন শহরে এসে জড়ো হয়।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে বলেন —“ভোলা–বরিশাল সেতু চাই”, “হায় হায় সরকার সেতু মোদের দরকার।’’
বিক্ষোভ সমাবেশে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা থাকলেও নদীর ফেরি বা লঞ্চ ঠিকমতো পাওয়া যায় না। সময় মতো বরিশাল পৌঁছানো অনেক সময় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ব্যবসায়ী আবু তাহের জানান, পরিবহন ব্যয়ের কারণে পণ্য আনা–নেওয়ায় বাড়তি খরচ বাড়ছে। সারা দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ উন্নত করতে সেতু ছাড়া উপায় নেই।
চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রেও অবর্ণনীয় দুর্ভোগের কথা জানান অনেকেই। বোরহানউদ্দিনের গৃহিণী সালমা বেগম বলেন, জরুরি রোগীকে বরিশাল মেডিকেলে নেওয়ার সময় ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এতে রোগীর জীবন ঝুঁকিতে পড়ে।
পরে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধি দল ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) রনজিৎ চন্দ্র দাসের সাথে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক শেষে ইউএনও বলেন,
ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের দাবি সম্পূর্ণ যৌক্তিক। জনগণের এ দাবি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন হয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষ থেকে একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত সেতুর জন্য প্রাথমিক জরিপও চোখে পড়েনি। ফলে হতাশা ও ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে।
প্রবীণ নাগরিক মো. সাহেব আলী বলেন, আমরা ২০ বছর ধরে শুনছি সেতু হবে, হবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। এখন আর প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস নেই—আমরা বাস্তব অগ্রগতি দেখতে চাই।
শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সমাপ্ত—দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় আন্দোলনকারীরা ।
প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি চলার পর এলাকাবাসী শান্তিপূর্ণভাবে সরে যায়। তবে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি থামবে না। প্রয়োজনে জেলা শহর ঘেরাওসহ বৃহত্তর আন্দোলন হবে।
সচেতন মহল মনে করেন, ভোলা–বরিশাল সেতু শুধু মানুষের স্বপ্ন নয়—এটি দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ, অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও ব্যবসায়িক অগ্রগতির জন্য জরুরি অবকাঠামো। বাস্তবায়ন হলে ভোলার সঙ্গে দেশের মূল ভূখণ্ডের সংযোগ স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রূপ পাবে—এমন আশায় বুক বেঁধে আছে লাখো মানুষ ।
