রংপুরে বিভাগীয় ইজতেমা শুরু, ২ মুসল্লির মৃত্যু
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৫ পিএম
রংপুরে বিভাগীয় ইজতেমা শুরুর প্রথম দিনে নগরীর আমাশু কুকরুলের ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রংপুরে শুরু হয়েছে বিভাগীয় ইজতেমা। এবারই প্রথমবারের মতো শুরু হলো লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির উপস্থিতিতে নিজেদের মনের সংস্কার ও আত্মশুদ্ধির এই তাবলিগ জামাতের বিভাগীয় ইজতেমা।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোরে তাবলিগ জামাতের তিন দিনব্যাপী বিভাগীয় ইজতেমা আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও বুধবার দুপুর থেকে ইজতেমা মাঠে আসা শুরু করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রাতেই মুসল্লিদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে ইজতেমার মাঠ। নিজ নিজ জেলা ও উপজেলাভিত্তিক নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান নেন মুসল্লিরা। বৃহস্পতিবার সকালে আমবয়ান করেন মাওলানা আব্দুল কাদের। তিন দিনব্যাপী বিভাগীয় এই ইজতেমা শনিবার দুপুর ১২টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে।
এদিকে রংপুর বিভাগীয় ইজতেমার মাঠে ঠান্ডাজনিত সমস্যার কারণে দুই মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশ এ মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে নিশ্চিত করে। বৃহস্পতিবার ইজতেমা শুরুর পর দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইজতেমার মাঠের ৬ নম্বর হালকার জিম্মাদার ইঞ্জিনিয়ার আবুল হোসেন।
তিনি বলেন, ইজতেমার মাঠে ঠান্ডাজনিত কারণে আজ দুপুরে দুইজন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। বাদ জোহর ময়দানেই জানাজা শেষে তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মারা যাওয়া মুসল্লিরা হলেন রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানার সাঈদুর রহমান। অপরজন টাঙ্গাইল জেলার তারা মিয়া। টাঙ্গাইল জেলার মুসল্লি তারা মিয়া ৪০ দিনের চিল্লায় রংপুর এসে ইজতেমায় অংশ নিয়েছিলেন।
রংপুর নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমাশু কুকরুল এলাকায় প্রায় ৮০ একর জমি নিয়ে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বিভাগীয় ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। মাসব্যাপী প্রস্তুতিতে পুরো ইজতেমার মাঠ ঘেরা হয়েছে। রাতের মধ্যেই সবাই ইজতেমা মাঠে আসেন।
আয়োজক কমিটির তথ্যমতে, এবারের বিভাগীয় ইজতেমায় রংপুর বিভাগের আট জেলা থেকে তাবলিগের সাথিরা অংশ নিয়েছেন। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার ৪০ দিনের চিল্লায় অংশ নেওয়া সাথিরাও ইজতেমায় অংশ নেন। সবমিলিয়ে কয়েক লক্ষাধিক মুসল্লি হবেন বলে ধারণা তাদের।
এছাড়াও ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসে অংশ নিয়েছেন প্রায় ২০০ বিদেশি মেহমান।
আয়োজক কমিটির সদস্য খালেকুজ্জামান রাজা জানান, বিভাগীয় ইজতেমা মাঠকে আলোকিত রাখতে বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি শতাধিক জেনারেটর প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মুসল্লিদের ওজু ও গোসলের জন্য পর্যাপ্ত পানি ও ট্যাপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে একসঙ্গে কয়েক হাজার মানুষ ওজু করতে পারবেন। আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অর্ধশতাধিক মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক মাঠে নিয়োজিত আছে।
অপরদিকে বিভাগীয় ইজতেমার নিরাপত্তায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাদা পোশাকে পুলিশি নজরদারির পাশাপাশি সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
জানতে চাইলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী বলেন, এবারই প্রথম বিভাগীয় পর্যায়ে রংপুরে ইজতেমা শুরু হয়েছে। ইজতেমা উপলক্ষে আয়োজক কমিটি, জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। নির্বিঘ্নে ইজতেমার কাজ সম্পন্ন ও ট্রাফিক ব্যবস্থা পরিচালনায় আয়োজক কমিটির স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে পুলিশ সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
