ওসমান হাদির মৃত্যু
চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনারের বাসভবনে হামলা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৭ এএম
চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনে ছাত্র জনতার হামলা। পুলিশের টিয়ারসেল নিক্ষেপ। যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে খুলশীতে অবস্থিত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অফিসের সামনে জুলাই যোদ্ধাসহ এনসিপি নেতা-কর্মী ও ছাত্র-জনতা রাত সাড়ে ১০টার দিকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একই সময়ে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন বিক্ষুব্ধ জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে ষোলশহর চশমা হিলে সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে গিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভারতীয় হাই কমিশনের নিরাপত্তায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে রাত সোয়া ১টার দিকে হঠাৎ হাই কমিশনারের বাসভবনে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলা চালাতে থাকে বিক্ষুব্ধরা।
এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে পুলিশের ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ টিআর সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন উপ-কমিশনার বলেন, এনসিপি নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবেই বিক্ষোভ করছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে অপর একটি গ্রুপ হঠাৎ করেই সহকারী হাই কমিশনারের বাসভবন ও অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ অ্যাকশনে যায় এবং দ্রুতই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
খুলশিতে অবস্থিত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার অফিসের বাউন্ডারির ভেতরেই হাই কমিশনারের বাসভবন। সেখানেই বসবাস করেন সহকারী হাই কমিশনার ড. রাজিব রঞ্জন চক্রবর্ত্তী। তবে ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি খুলশি থানা পুলিশ। রাত পৌনে ২টায় এই রিপোর্ট লেখার সময় ভারতীয় হাই কমিশন অফিসের সামনের সড়ক ফাঁকা ছিল। বিক্ষোভরতরা পুলিশী অ্যাকশনে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, অসীম সাহসী জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও শোকের ছায়া নেমে আসে। তবে শোককে শক্তিতে পরিণত করে জুলাই যোদ্ধারা হাদি হত্যার বিচার দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন রাতে। খুলশীতে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন অফিস ও সহকারী হাই কমিশনার ড. রাজিব রঞ্জন চক্রবর্ত্তীর বাসভবনের সামনে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা হাদির খুনিদের ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত ভারতীয় হাই কমিশন অফিস বন্ধ রাখার দাবি জানান। এ সময় তারা ‘দিল্লি না ঢাকা, ‘গোলামী না আজাদী’, ‘আপস না সংগ্রাম’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
একই সময়ে ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষেভ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। সেখানেও তারা হাদির হত্যার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়। এখান থেকে প্রতিবাদি ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে চশমা হিলে সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাড়িতে গিয়ে হামলা ভাংচুর ও বাড়ির সামনে অগ্নিসংযোগ করে। পরে একটি মিছিল ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের খুলশি অফিস ও বাসভবনের সামনে গিয়ে জড়ো হয়। রাত সাড়ে ১২টায় এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন অফিসের সামনে বিক্ষোভ চলছিল।
