তিনটি কারণে মাদক নির্মূল করা যায়নি: পুলিশ সুপার
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বরিশালে অপরাধ কমাতে পালেও তিনটি কারণে মাদক নির্মূল করা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বরিশালের পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত মহম্মদ বেলায়েত হোসেন। তবে এ ব্যাপারে এখনই তিনি হাল ছাড়তে রাজি হননি।
তিনি বলেছেন, বরিশালের ১০ উপজেলা মাদকমুক্ত করতে হলে স্থানীয়ভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে কোনো দিনও এই এলাকা থেকে মাদক মুক্ত করা সম্ভব হবে না।
রোববার দুপুরে বানারীপাড়া থানা পুলিশ আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক শান্তি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরিশালের পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত মহম্মদ বেলায়েত হোসেন এ কথা বলেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, তিনটি কারণে এলাকা থেকে মাদক বিক্রেতাদের দমন করা যাচ্ছে না।
এ ক্ষেত্রে তিনি গোপন সূত্রে মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন- মাদক বিক্রেতাদের গ্রেফতার করলেই তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় এসে পুলিশের সামনে সামনে ঘুরে বেড়ায়। এক পর্যায় তারা আবার মাদক বিক্রি শুরু করে। এছাড়া তাদেরকে গ্রেফতার করার সময় তাদের পক্ষে সাফাই গাওয়া লোকজনের অভাব হয় না। এছাড়া মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার সময় তাদের লোকজন সেখানে হাজির হয়ে ওই মামলায় সাক্ষী হন। পরে তারা পুলিশি তদন্ত শেষে আদালতে গিয়ে ওই মাদক বিক্রেতার পক্ষে সাক্ষী দিয়ে আসেন। ফলে মাদক বিক্রেতারা ওই মামলায় আদালত থেকে অনায়াসে ছাড়া পেয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, তিনটি পেশার লোক কোনো না কোনোভাবে মাদক বিক্রেতাদের সহায়তা করে আসছেন।
এর উদাহরণ দিতে গিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশের মধ্যে এমন কেউ আছেন, যারা মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে বখরা নেন। ঠিক একইভাবে স্থানীয় পত্রিকার কতিপয় সংবাদকর্মী আছেন, যারা পত্রিকা দিয়ে কম অনারিয়াম পান এবং তারা ওই মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে রিপোর্টের ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা নিচ্ছেন। এছাড়া মাদক বিক্রেতারা স্থানীয়ভাবে কোনো না কোনো রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে এসব অবৈধ মাদক ব্যবসা করে আসছেন। ফলে তাদেরকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে তিনি এলাকা মাদক মুক্ত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলাবিষয়ক শান্তিসভায় বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস. সরফুদ্দিন আহমদ সান্টু, উজিরপুর সার্কেলের সিনিয়র এএসপি মো. একরামূল আহাদ, সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শেখ জুবায়ের শুভ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খলিলুর রহমান চোকদার, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. শাহ আলম মিয়া, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক নেতা গোলাম মাহমুদ মাহাবুব মাস্টার, উপজেলা ইমাম সমিতি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সভাপতি মাওলানা মো. শিহাব উদ্দিন, উপজেলা জামায়াত আমির প্রভাষক মো. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
