বিএনপি নেতাকে আ.লীগ বানিয়ে কারাগারে পাঠাল পুলিশ
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দল বরিশাল সদর উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন মনিরকে আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী উল্লেখ করে বিএনপির অফিস পোড়ানো মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বরিশাল নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুকের দায়ের করা ওই মামলায় মনিরের নাম না থাকলেও অজ্ঞাতনামা আসামি হিসাবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারের তিন দিন পর বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড়ের পাশাপাশি ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে।
বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন মনিরকে ১৬ এপ্রিল নগরীর নতুনবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার পরিবারকে জানানো হয়, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের দায়েরকৃত দলীয় কার্যালয় পোড়ানো মামলায় সন্দেহজনকভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনে উলেখ করা হয়, মনির বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী।
মনিরের ভাই বাদল সিকদার বলেন, দুপুর ১২টার দিকে নতুনবাজার ফাঁড়ির এক এসআই গাড়ি নিয়ে তার দোকানে এসে বলে যে, ওসি স্যার তাকে ডেকেছে। কারণ জানতে চাওয়ায় সে খুব উত্তেজিত হয়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে তাকে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেয়। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর বিকালে জানতে পারি তাকে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার ভাই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। আওয়ামী লীগের করা মামলায় আসামি হয়ে জেল খেটেছে। পুলিশ এসে কোনো কিছু বলল না, কী অভিযোগ তাও জানাল না। ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগ বানিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দিল। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে আমার ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শাহ আলম হাওলাদার বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময়ে আমরা একসঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। মনির বিএনপির সক্রিয় কর্মী। তাছাড়া সে উপজেলা বাস্তুহারা দলের আহ্বায়ক কমিটির ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক। তাকে পুলিশ আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী বলে গ্রেফতার করেছে এটা দুঃখজনক। অন্য কারও বিষয়ে বললে সেটি মেনে নেওয়া যেত। সাখাওয়াত হোসেন মনিরকে আওয়ামী লীগ সাজানোর এই পাঁয়তারা হাস্যকর। যতদূর জানি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হয়েছেন মনির। এই নিয়ে স্থানীয় দুটি গ্র“পের মধ্যে বিরোধ চলছে। সেই বিরোধের সূত্র ধরে একটি মহল পুলিশকে ব্যবহার করে মনিরকে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে।
জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দল বরিশাল জেলার আহ্বায়ক মিলন মুন্সী বলেন, সাখাওয়াত হোসেন মনির আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়ে মামলার আসামি হন। ওই সময়ে বেশ কয়েকবার তিনি কারাবরণও করেন। বিএনপির এই পরীক্ষিত কর্মীকে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠাল। পুরো ঘটনাটি একটি চক্রান্ত। একটি পক্ষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য পুলিশ চক্রান্তের অংশ হয়ে বাস্তুহারা দলের নেতাকে আওয়ামী লীগের কর্মী সাজিয়েছে। আমরা এ ঘটনায় হতবাক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর রেজাউল ইসলাম বলেন, মনিরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে বেরিয়ে আসবে তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক। রাজনৈতিক মামলাটি অনেক বড় মামলা। তবে এটুকু বলব, কেউ হয়রানির শিকার হবেন না।
