এনজিওর ঋণের চাপে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের বোঝা বইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন চাঁদনী বেগম (৩২) বরিশালের বানারীপাড়ার এক প্রবাসীর স্ত্রী।
জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার সলিয়াবাকপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আমিনুল ইসলামের স্ত্রী চাঁদনী বেগম দ্বিতল ভবনের নিজ কক্ষের দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে পার্শ্ববর্তী ছাদে থাকা স্কুলছাত্রী লামিয়া খানম ওই ভবনের জানালার ফাঁক দিয়ে চাঁদনীর লাশ ঝুলতে দেখে ডাক-চিৎকার দেন। এ সময় পরিবারের লোকজন চাঁদনীর রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফ্যানের সঙ্গে তার লাশ ঝুলতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে এসআই কমল দে সেখানে গিয়ে চাঁদনীর লাশ উদ্ধার করে সুরাতহাল রিপোর্ট শেষে থানায় নিয়ে আসেন। এ সময় তিনি চাঁদনীর বিছানার ওপর পড়ে থাকা মোবাইল ফোন ও গলায় ফাঁস দেওয়া ওড়নাসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করেন। এ ঘটনায় চাঁদনীর ভাই পলাশ বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন।
থানার ওসি মোস্তফা মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসআই কমল দে-কে নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কমল দে রাতেই চাঁদনীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
তিনি যুগান্তরকে বলেন, চাঁদনীর কাছে বেশ কয়েকটি এনজিও ঋণের টাকা পাবে। তারা প্রতিনিয়ত ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য চাঁদনীকে তাগাদা দিয়ে আসছিলেন।
এছাড়া তার স্বামী আমিনুল ইসলাম বিদেশে যাওয়ারে আগে বিভিন্নজনের কাছ থেকে অনেক টাকা ধার নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি নিজের ঋণ ও স্বামীর নেওয়া ধারের টাকা সময়মতো পাওনাদারদের পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে যদি কেউ চাঁদনীকে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য অস্বাভাবিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে থাকেন সেই বিষয়টির সঙ্গে অন্য সব দিক ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি যুগান্তরকে জানান।
এদিকে চাঁদনীর স্বামী কুয়েত প্রবাসী আমিনুল ইসলাম প্রসঙ্গে থানা ও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি যুগান্তরকে জানান, সালিয়াবাকপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম ৮ বছর পূর্বে অর্ধশত কোটি টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
এ সময় তিনি পাওনাদারদের টাকা আদায়ের তাগাদার কারণে বাড়ি থেকে পালিয়ে কুয়েত চলে যান। পরে তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনের টাকা ফেরত না পেয়ে আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা করেন। বর্তমানে বানারীপাড়া থানায় তার বিরুদ্ধে আদালতের তিনটি মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে।
এ ব্যাপারে থানার ওসি মোস্তফা যুগান্তরকে বলেন, কুয়েত প্রবাসী আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য আদলতে করা তিনটি মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী চাঁদনীর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে এনজিও এবং তার ঋণের বোঝাসহ মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই করা হচ্ছে।
