Logo
Logo
×

সারাদেশ

বগুড়ার গ্রামের রাস্তায় চলছে জ্বালানিবিহীন মিনিবাস

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম

বগুড়ার গ্রামের রাস্তায় চলছে জ্বালানিবিহীন মিনিবাস

বগুড়ার নন্দীগ্রামের ইজিবাইকচালক আবু মুসা জ্বালানিবিহীন ১১ সিটের একটি মিনিবাস তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মাত্র ৫০ টাকার বিদ্যুৎ খরচে একবার চার্জ দিলে ১২০ কিলোমিটার পথ চলা যায়। প্রতিদিন গড়ে হাজার টাকা বাড়িতে নিয়ে যান। তার মিনিবাসটি দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের শালুকাপাড়া গ্রামের বাসেদ আলীর ছেলে আবু মুসা (৪২) প্রায় নয় বছর ওমানে ছিলেন। করোনার সময় ২০২১ সালে দেশে ফিরে আসেন। এরপর কৃষিকাজের পাশাপাশি ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

ইজিবাইক চালানো ঝুঁকি তাই তিনি জ্বালানিবিহীন মিনিবাস তৈরির চিন্তাভাবনা করেন। এ চিন্তা থেকে তিনি ১১ সিটের ও নিরাপদ চার চাকার একটি মিনিবাস তৈরি করেন। বিভিন্ন ওয়ার্কশপের মিস্ত্রিদের সহযোগিতা নেন। মোট ১২ সিটের এ মিনিবাসে যাত্রীদের জন্য ১১টি ও চালকের জন্য একটি সিট রয়েছে। গাড়িতে উঠানামার জন্য রয়েছে পাঁচটি আলাদা দরজা। আলো-বাতাসের জন্য জানালার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। সিটগুলোও বেশ আরামদায়ক। এজন্য যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারছেন।

বাসের যাত্রী স্থানীয় নজরুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, সিদ্দিক হোসেন প্রমুখ জানান, আবু মুসার তৈরি ছোট আকারের জ্বালানিবিহীন ও পরিবেশবান্ধব এমন মিনিবাস আগে কখনো দেখেননি। চার্জার ব্যাটারিচালিত হওয়ায় গাড়ির কোনো শব্দ নেই। সিটগুলো খুব আরামদায়ক।

মিনিবাসের মালিক ও চালক আবু মুসা জানান, বগুড়ার নন্দীগ্রাম তথা পুরো জেলায় তিনিই প্রথম জ্বালানিবিহীন ছোট মিনিবাস এনেছেন। আদরের দুই মেয়ে নামানুসারে গাড়ির নাম দিয়েছেন মনি-মুক্তা পরিবহণ। এই গাড়ি বানিয়ে নিতে তার পাঁচ লাখ ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ঠিকমতো গাড়ি চালালে প্রতিদিন দেড় হাজার টাকার বেশি ভাড়া পাওয়া যায়। খরচ বাদে প্রতিদিন গড়ে হাজার টাকা বাড়িতে নিয়ে যান।

তিনি বলেন, একবার ব্যাটারিতে চার্জ দিলে ১২০ কিলোমিটারের বেশি চলে। চার্জ দিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকার বিদ্যুৎ লাগে। রাস্তা ভালো হলে ৫৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানো যায়। চার চাকা হওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি কম। জ্বালানি, ধোঁয়া ও শব্দবিহীন হওয়ায় পরিবেশবান্ধব তার মিনিবাস। তার মিনিবাসটি দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছেন।

আবু মুসা আরও জানান, কোনো রুটের চেইনমাস্টাররা তাকে এ মিনিবাস চালানোর সিরিয়াল দেন না। তাই বাধ্য হয়ে যাত্রীরা যেদিকে যান সে রুটেই চালাচ্ছেন। অনেক সময় যাত্রী নিয়ে বগুড়া সদরেও যান। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলে তিনি ভবিষ্যতে এমন পরিবেশবান্ধব আরও গাড়ি বানাবেন।

নন্দীগ্রামের পরিবহণ ব্যবসায়ী ও শিল্প বণিক সমিতির সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, জ্বালানিবিহীন মিনিবাস তৈরি একটি ভালো উদ্যোগ। সরকার যদি ব্যাটারিচালিত পরিবহণে সহযোগিতা করে, তাহলে ভবিষ্যতে এটি মডেল হতে পারে।

বগুড়া

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম