Logo
Logo
×

সারাদেশ

পাঁচ বছরের শিশু হত্যা মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম

পাঁচ বছরের শিশু হত্যা মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন

বগুড়ার শিবগঞ্জে জমিজমাসংক্রান্ত পূর্ববিরোধের জেরে পাঁচ বছর বয়সি শিশু সানজিদা আকতার সালমাকে তুলে নিয়ে হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের জরিমানা করা হয়েছে।

অপর আসামিকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। আর অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ লুৎফর রহমান শিশির জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান মাখন এ তথ্য দিয়েছেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মাসিমপুর চালুজা চন্দ্রপুকুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ও একই গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে হাবিল খাঁ রকি।

তিন বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন একই গ্রামের মৃত জামাল খাঁর ছেলে মজিবর রহমান। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- আবদুল লতিফ খানের ছেলে আবদুর রশিদ ও হবিবর রহমানের মেয়ে পারভীন বিবি।

আদালত সূত্র জানায়, দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শরিফুল ইসলাম ও হাবিল খাঁ রকিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে তাদের ৩০ দিনের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। দণ্ডবিধির ২০১, ৩৪ ধারায় তাদের দুইজনকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। উভয় সাজা একসঙ্গে চলবে। হাজতবাস থেকে মূল সাজা বাদ যাবে। জরিমানা সমূদয় ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভিকটিমের বাবাকে প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় আসামি মজিবর রহমানকে তিন বছরে সশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ১৫ দিনের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তার ইতোপূর্বে হাজতবাস মূল সাজা হতে বাদ যাবে।

সূত্রটি আরও জানান, নিহত শিশু সানজিদা আকতার সালমা বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মাসিমপুর চালুজা চন্দ্রপুকুর গ্রামের শামীম শেখ ধলুর মেয়ে। শিশুটি গত ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর বেলা ১০টার দিকে বাড়ির বাহিরে খেলতে যায়। এরপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন রাত ১১টার দিকে বাড়ির কাছে জানালার নিচে গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমসহ সালমার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার কানে দুই আনা ওজনের দুল ছিঁড়ে নেওয়া হয়। শিবগঞ্জ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

এ ব্যাপারে শিশুর বাবা শামীম শেখ ধলু থানায় হত্যা ও লাশ গুমের মামলা করেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) লুৎফর রহমান বিভিন্ন সময় উল্লিখিত পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেন। তদন্তে জানা যায়, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে আসামিরা শিশুটিকে বাড়ির কাছ থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে শিশু তাদের চিনতে পারায় শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ বাড়ির কাছে ফেলে দেয়। কান থেকে সোনার দুল ছিঁড়ে নেওয়া হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) লুৎফর রহমান আদালতে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। বাদীপক্ষে বগুড়া অ্যাডভোকেটস বার সমিতির সভাপতি আতাউর রহমান মুক্তা সার্বিক সহযোগিতা করেন।

বগুড়া

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম